—প্রতীকী ছবি।
কেরলবাসী ২৬ বছরের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যানা সেবাস্টিয়ানের মৃত্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুণের বহুজাতিক সংস্থা ‘আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং’। এই ধরনের কর্পোরেটগুলিতে কাজের পরিবেশ বদলের জন্য অনেকেই সুর চড়াতে শুরু করেছেন। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে বিস্তর লেখালিখি। তার মধ্যেই এ বার ‘ডেলয়েট’-এর কর্মী পরিচয় দিয়ে সংস্থাটির নামে মারাত্মক অভিযোগ করলেন এক ব্যক্তি। যা সত্যি হলে তদন্তের মুখে পড়তে হতে পারে ওই অ্যাকাউন্ট জায়েন্ট সংস্থাকে।
সমাজমাধ্যমে ‘ডেলয়েট’-এর উপর ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া ওই ব্যক্তির দাবি, আমেরিকার সংস্থায় অডিটর পদে রয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর নাম জানা যায়নি। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, বহুজাতিক সংস্থাটিতে কর্মীদের ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হয়। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ১৫ ঘণ্টার কম সময় পান তাঁরা। ভারতে দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যবসা করছে ডেলয়েট। তবে এই ঘটনা এ দেশের ক্যাম্পাসে হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, অভিযোগকারী সহকর্মীদের সঙ্গে কথোপকথনের স্ক্রিনশট সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছেন। যা নিয়ে নেটদুনিয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এ ছাড়া অ্যানাকে নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) লম্বা পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
‘‘আমি বুঝতে পেরেছি অ্যানার উপর দিয়ে কোন ঝড় বয়ে গিয়েছে। সব সময়ে মনে রাখতে হবে, তুমি ওদের কাছে কেবলমাত্র একটা এমপ্লোয়ি নম্বর। এর বেশি কিছু নও। তাই সংস্থা হিসেবে ওরা তোমার উপর দরদী হবে, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।’’ পোস্টে লিখেছেন অভিযোগকারী ব্যক্তি।
আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের পর ডেলয়েটের বিরুদ্ধে এ হেন মারাত্মক অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো ফুঁসে উঠে একের পর এক পোস্ট করতে শুরু করেন নেটিজেনদের একাংশ। কর্পোরেট সংস্থাগুলিতে কাজের সময় ঠিক রাখার জন্য বিশেষ আইন তৈরির কথা বলেছেন তাঁরা। কেউ কেউ আবার কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন। একজন লিখেছেন, ‘‘আমার বোনও এই ধরনের বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করে। সে-ও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বোন একবা র দাঁত দেখাতে গিয়েছিল। চিকিৎসক যখন ওর দাঁতের অবস্থা খুঁটিয়ে দেখছেন, তখনই অফিসের এক সিনিয়র ফোন করেন। অমানবিকের মতো ওকে দ্রুত কাজে ফিরতে বলেছিলেন ওই ব্যক্তি।’’
অ্যানার মৃত্যুর পর আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। সংস্থার তরফে অস্বাভাবিক কাজের চাপের কথা অস্বীকার করা হলেও মৃতার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত ডেলয়েট তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।