Electric Supply

কাজ শেষ, শীঘ্রই বিদ্যুৎ ভাঙড় পাওয়ার গ্রিডে

বিভিন্ন সূত্রের খবর, ভাঙড় সাবস্টেশনের সঙ্গে হাই-ভোল্টেজ তারের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ সাবস্টেশনের যোগাযোগ তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৬:৩৮
Share:

ফাইল চিত্র।

স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভে একটা সময় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রকল্পের কাজ। কিন্তু ধাপে ধাপে সেই সব বাধা কাটিয়ে কাজ শেষ হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ আসা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এ ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের কথাও শুরু হয়েছে।

Advertisement

বিভিন্ন সূত্রের খবর, ভাঙড় সাবস্টেশনের সঙ্গে হাই-ভোল্টেজ তারের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ সাবস্টেশনের যোগাযোগ তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। ভাঙড়ের সঙ্গে হাই-ভোল্টেজ তারের যোগাযোগ হয়ে গিয়েছে ফরাক্কার এনটিপিসি সাবস্টেশনেরও। অন্য দিকে, পাওয়ার গ্রিডের বিহারের পূর্ণিয়া সাবস্টেশন থেকে ফরাক্কা ও গোকর্ণের মধ্যেও তারের যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। পরের দফায় শুধু গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। আর তা হয়ে গেলে উপকৃত হবেন রাজারহাট, নিউটাউন-সহ কলকাতা শহরতলি এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েক লক্ষ বিদ্যুৎ গ্রাহক। রাজ্যের বিদ্যুৎ সংবহন ক্ষমতাও ৩০০০ মেগাওয়াট বেড়ে যাবে। কবে পূর্ণিয়া-ফরাক্কা-গোকর্ণ-ভাঙড় লাইনে বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থার সঙ্গে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুভাষগ্রাম-জিরাট বিদ্যুৎ লাইনের সঙ্গে ভাঙড় সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়।

পাওয়ার গ্রিডের এক পদস্থ কর্তা জানান, বিদ্যুৎ দেওয়ার আগে শেষ মুহূর্তের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি-সহ কিছু ছোটখাটো কাজ চলছে। করোনার জন্য ইঞ্জিনিয়াররা এক সঙ্গে কাজ করতে পারছেন না। তাই কিছুটা সময় লাগছে।

Advertisement

গ্রিড প্রকল্প

• ভাঙড়ে ৪০০/২২০ কেভির সাবস্টেশন।

• গোকর্ণয় আরও একটি সাবস্টেশন।

• ভাঙড় থেকে দু’টি হাই-ভোল্টেজ লাইন। একটি যোগ হয়েছে গোকর্ণয়। অন্যটি ফরাক্কা সাবস্টেশনে।

• বিহারের পূর্ণিয়া সাবস্টেশন থেকে অন্য একটি লাইন এসে মিশেছে ফরাক্কায়। আর একটি লাইন যোগ হয়েছে গোকর্ণয়।

• প্রকল্প খরচ ১৩০০ কোটি টাকা।

• ভাঙড় থেকে গোকর্ণ লাইন টানার খরচ ৮০০ কোটি।

রাজ্যের লাভ

• গ্রিড পরিকাঠামো শক্তিশালী হবে।

• রাজ্যে আনা যাবে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ।

• উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ পাঠানো যাবে অন্য জায়গায়।

• ভোল্টেজ আরও জোরদার হবে।

• উন্নততর পরিষেবা পাবেন বণ্টন সংস্থার গ্রাহকেরা।

স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভে বছর তিনেক আগে ভাঙড়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সাবস্টেশন তৈরি হয়ে গেলেও, বাড়ি এবং কৃষি জমির উপর দিয়ে হাই-ভোল্টেজ লাইন টানার কাজ করতে গিয়ে স্থানীয়দের প্রবল বাধার মুখে পড়ে সংস্থাটি। বিক্ষোভ, সংঘর্ষে কয়েক জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুও হয়। বাধা আসে আরও কয়েকটি জায়গা থেকে। পরে রাজ্য প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ফের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ব্লকের আরিজুল্লাপুর গ্রামের কিছু গ্রামবাসীর আপত্তিতে আবার এই প্রকল্পের লাইন টানার কাজ থমকে যায়। সে সব বাধা কাটিয়েই গ্রিড প্রকল্পের কাজ এ বার সম্পূর্ণ করা গিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর।

পাওয়ার গ্রিডের বিদ্যুৎ কর্তাদের একাংশের দাবি, এখন কোথাও কোনও সমস্যা নেই। নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ দেওয়ার কাজ শুরু করারই প্রস্তুতি চলছে সংস্থার অন্দরে। এখন ছাড়পত্র নিতে হবে সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির (সিইএ)। গ্রিড চালু হয়ে গেলেই রাজ্যে যেমন অনেক বেশি বিদ্যুৎ আনা যাবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সস্তার জলবিদ্যুৎও এই লাইন দিয়ে রাজ্যে আরও বেশি করে আসতে পারবে।

বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সব সময়েই রাজ্যের শক্তিশালী বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা থাকা দরকার। ভাঙড় প্রকল্প চালু হলে রাজ্য নিজের প্রয়োজনে অনেক বেশি বিদ্যুৎ যেমন নিতে পারবে, তেমনই ভোল্টেজও জোরালো হবে। আবার রাজ্যের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎও এর সাহায্যে সহজে বিক্রি করা যাবে।

আরও পড়ুন: বৈষম্য কমাবে অতিমারি, বলছে সমীক্ষা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement