আদায় হয়নি ঋণের টাকা। পাহাড় প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) চাপে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে লেনদেন বন্ধ কলিকাতা মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে বা জমা দিতে পারছেন না রাজ্যের একমাত্র মহিলা পরিচালিত সমবায় ব্যাঙ্কটির গ্রাহকেরা। মঞ্জুর হচ্ছে না নতুন ঋণ। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছে তাঁদের।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কটির ৮৫% ঋণই পরিণত হয়েছিল অনুৎপাদক সম্পদে। তার পরেই টাকা তোলা-জমা দেওয়া, ঋণ বিলি-সহ আরও কিছু লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বসানো হয় দু’জন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। সহায়তা দিতে গত বছরের মাঝামাঝি ১ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য। এখনও পর্যন্ত মিলেছে ২৫ লক্ষ।
ওই ব্যাঙ্ক ডেলি ডিপোজ়িট স্কিমের আওতায় দৈনিক ভিত্তিতে আমানতকারীদের থেকে টাকা সংগ্রহ করত। এ রকমই এক গ্রাহক রণবীর সাহা জানান, তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রায় ২.৫০ লক্ষ টাকা জমা রয়েছে। ব্যবসার জন্য টাকার দরকার হলেও ২০১৯ সালের জুলাই থেকে তুলতে পারছেন না। আর এক গ্রাহক শোভন দে-রও দাবি, প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা জমা থাকলেও তোলা যাচ্ছে না। গ্রাহকদের মতো সমস্যায় পড়েছেন প্রকল্পটির ব্যাঙ্ক নিযুক্ত এজেন্টরাও। এজেন্ট ঝর্না চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সামান্য কমিশনের ভিত্তিতে টাকা সংগ্রহ করে ব্যাঙ্কে জমা দিতাম। গ্রাহকেরা টাকা তুলতে না-পেরে আমাদের উপরে চড়াও হচ্ছেন।’’
এ প্রসঙ্গে ব্যাঙ্কটির সিইও বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি এজেন্টদের জানিয়েছি। আরও কিছু অনুৎপাদক সম্পদ উদ্ধার হয়েছে। শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, আর্থিক অবস্থার একটু উন্নতি হলেই নিষেধাজ্ঞাগুলি তোলা হবে।’’ তবে প্রশ্ন উঠছে, এত ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হল কী করে? ঋণ মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কী ভূমিকা ছিল? সিইও-র দাবি, ‘‘ঋণ কমিটি সমস্ত ধার মঞ্জুর করেছে।’’ আপাতত নিষেধাজ্ঞা উঠলে টাকা তোলার সময়ে যাতে হুড়োহুড়ি না-হয়, সেটা নিশ্চিত করাই লক্ষ্য বলে জানান তিনি।