মরিয়া: টালিগঞ্জে লম্বা লাইন। সামলাচ্ছে পুলিশ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দেশে লকডাউন ঘোষণার আগে তেল সংস্থাগুলির দাবি ছিল, রান্নার গ্যাসের জোগান স্বাভাবিক। বুকিংয়ের পরে গড়ে দু’তিন দিনেই সিলিন্ডার মিলবে। অথচ লকডাউন শুরুর দু’দিনের মধ্যেই চাহিদা মতো সিলিন্ডার না-পাওয়ার অভিযোগ তুললেন গ্রাহকদের একাংশ। বাড়ি থেকে বের না-হওয়ার সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার লম্বা লাইন দেখা গেল বহু গ্যাস ডিলারের দোকানে। যদিও তেল সংস্থাগুলির দাবি, জোগান স্বাভাবিক। বর্ধিত চাহিদা মেটাতে বাড়তি উৎপাদনও চলছে। জোরদার কাজ হচ্ছে বটলিং কারখানায়। তবে তারা মানছে, আচমকা গ্যাস সিলিন্ডারের বুকিং প্রায় ৫০% পর্যন্ত বাড়ায় চাহিদা-জোগানের ভারসাম্য কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। যে কারণে গ্রাহকদের কাছে সংস্থাগুলির আর্জি, প্রয়োজন না-থাকলে স্রেফ আতঙ্কের বশে কেউ যেন বাড়তি বুকিং না-করেন।
গ্রাহকদের অনেকেরই অবশ্য দাবি, যাঁদের প্রয়োজন, ভুগছেন তাঁরাও। সিলিন্ডার চট করে মিলছে না। ডেলিভারি বয়দের দেখা নেই। গাড়ি বন্ধ থাকায় ও পুলিশি টহলের জন্য নিজেরাও দোকানে গিয়ে সিলিন্ডার আনতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতিতে সংস্থাগুলি গ্যাসের উৎপাদন ও জোগান স্বাভাবিক আছে বলে আশ্বাস দিচ্ছে ঠিকই। তবে করোনা সংক্রমণের ভয়ে ডেলিভারি বয়দের একাংশ যে কাজে আসছেন না, সেটাও মানছে। যদিও তাদের দাবি, সিলিন্ডার সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে তারা।
ইন্ডেন জানিয়েছে, বুকিং বেড়েছে ৫০%। সূত্রের খবর, সংস্থার ডিলাররা দৈনিক গড়ে প্রায় ২.৪০ লক্ষ গ্রাহককে সিলিন্ডার পৌঁছতে পারে। বুকিং হয় গড় ২-২.২০ লক্ষ। কিন্তু মঙ্গল, বুধবার হয়েছে যথাক্রমে ২.৯৭ ও ৩.১৩ লক্ষ। এইচপি গ্যাস সূত্রে খবর, তাদের দৈনিক বুকিং বেড়েছে ৩০%-৪০%। ভারত গ্যাসের ক্ষেত্রে দেড় দিনে তা ২০ শতাংশেরও বেশি। ফলে সব মিলিয়ে সিলিন্ডার পেতে গড়ে দিন পাঁচেক লাগছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ
সিলিন্ডার বুক করলেও পেতে দেরি হচ্ছে।
কোথাও দোকানই বন্ধ।
ডেলিভারি বয় কম।
গাড়ি বন্ধ, নিজেরা কী করে সিলিন্ডার আনবেন?
বিশেষ করে ভুগছেন প্রবীণ মানুষেরা।
তেল সংস্থা ও ডিলারদের দাবি
হঠাৎ ‘আতঙ্কের’ বুকিং স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০%-৫০% বেড়েছে।
গ্যাস উৎপাদন ও সিলিন্ডারের জোগান স্বাভাবিক। বাড়তি চাহিদা পূরণেরও চেষ্টা চলছে।
তবে বাড়তি চাহিদা জোগানে সাময়িক কিছু সমস্যা তৈরি করেছে।
সংক্রমণের ভয়ে কিছু গাড়ির চালক ও ডেলিভারি কর্মী কাজে আসছেন না।
বিকল্প পথে অবস্থা সামলানো হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রে কাজ লাগানো হচ্ছে অন্য
তেল সংস্থার কর্তাদের দাবি, ডেলিভারি বয়রা বহু এলাকায় প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। সংস্থা ও ডিলারদের কর্মী, বটলিং কারখানা থেকে সিলিন্ডার বয়ে আনা লরির চালকদের অনেককে বাড়ি থেকেও বাধা দেওয়া হচ্ছে কাজে আসতে। সব মিলিয়ে কর্মী সংখ্যা ২০% কমেছে।