প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে গত বছরের জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছিল। সেই বাজেটের হালুয়া উৎসবের ছবি তুলে ধরে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রকে বিঁধে অভিযোগ করেছিলেন, এটি তৈরির প্রক্রিয়ায় কোনও দলিত, জনজাতি কিংবা অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণির আধিকারিক যুক্ত নেই। সূত্রের দাবি, সেই ঘটনার জেরেই এ বছর কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক হালুয়া উৎসবের কোনও ছবিই প্রকাশ করল না।
প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। তার সপ্তাহ খানেক আগে নর্থ ব্লকে শুরু হয় বাজেটের নথি ছাপার কাজ। সেই সময়েই হালুয়া রান্না করে অর্থ মন্ত্রকের আধিকারিক, কর্মীদের মধ্যে বিলি করা হয়। অর্থমন্ত্রী-সহ মন্ত্রকের সচিবরা সেই অনুষ্ঠানের সময় হাজির থাকেন। সেই ছবিও সকলের সামনে আনা হয় বরাবর। এ বার ২৪ জানুয়ারি হালুয়া উৎসব হয়েছে। কিন্তু প্রতি বারের মতো তার কোনও ছবি প্রকাশ করা হয়নি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত বছর এর ছবি নিয়ে রাহুল লোকসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই কারণেই এ বার তা প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাহুল লোকসভায় বলেছিলেন, বাজেট তৈরির সঙ্গে যুক্ত ২০ জন অফিসারের মধ্যে মাত্র দু’জন অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। কিন্তু হালুয়া উৎসবের ছবিতেও তাঁদের দেখা যাচ্ছে না। গত সোমবার বি আর অম্বেডকরের জন্মস্থান মহূতে গিয়েও কংগ্রেস নেতা বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের ৯০ জন শীর্ষ আধিকারিক কোন রাজ্যে কী উন্নয়নের কাজ হবে, তা ঠিক করেন। এই ৯০ জনের মধ্যে মাত্র তিন জন দলিত, অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণি এবং জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। অথচ শুধু অন্যান্য পিছিয়ে থাকা মানুষদের ভাগই জনসংখ্যায় ৫০ শতাংশের বেশি।’’ জনসংখ্যার ভাগ অনুযায়ী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতেই জাতিগণনা জরুরি বলে যুক্তি দিয়েছেন তিনি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এ বারও হালুয়া উৎসবের ছবি প্রকাশ করলে রাহুল ফের আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যেতেন। উল্লেখ্য, হালুয়া উৎসবের পরে শুরু হয় বাজেট তৈরির কাজে যুক্ত মন্ত্রকের অফিসার, কর্মীদের সকলের থেকে আলাদা থাকার পর্ব। তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য যতক্ষণ সংসদে অর্থমন্ত্রী বাজেট পড়া শেষ না করছেন, ততক্ষণ তাঁদের মন্ত্রকের নির্দিষ্ট ঘরে থাকতে হয়।