এলোমেলো পরিকল্পনার জন্য কেজি-ডি৫-এর মতো গভীর সমুদ্রের প্রকল্পগুলির কাজ ক্রমাগত পিছিয়ে চলেছে
তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ওএনজিসির গুরুত্বপূর্ণ তেল ক্ষেত্রগুলিতে বেসরকারি সংস্থাকে যুক্ত করার জন্য অনেক দিন ধরেই তাগাদা দিয়ে আসছে কেন্দ্র। এবার ওই সমস্ত প্রকল্পের কাজে দেরির জন্য নিজেদের বিরক্তির কথা বুঝিয়ে দিল তারা। সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসারদের বক্তব্য, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে সেগুলির আমদানির খরচও বেড়ে চলেছে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির উৎপাদন সেই খরচ কিছুটা কমাতে পারত। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে এর ঠিক উল্টো।
এলোমেলো পরিকল্পনার জন্য কেজি-ডি৫-এর মতো গভীর সমুদ্রের প্রকল্পগুলির কাজ ক্রমাগত পিছিয়ে চলেছে। এর জন্য আগের পরিকল্পনার তুলনায় ১৮,০০০ কোটি টাকা আমদানি খরচ বেশি গুনতে হবে কেন্দ্রকে। ওএনজিসি অবশ্য এই অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, ওএনজিসির মতো মহারত্ন সংস্থার ‘ব্যর্থতার’ দায় কেন্দ্রই বা কী ভাবে ঝেড়ে ফেলতে পারে? বিশেষ করে যখন চলতি অর্থবর্ষের জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে রেকর্ড মুনাফার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। লাভের খাতায় ঢুকেছে ১৮,৩৪৭ কোটি টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সরকারি অফিসার জানিয়েছেন, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, কেজি-৫ ক্ষেত্রের ক্লাস্টার-২ থেকে ২০১৯ সালের জুনে গ্যাস উৎপাদন শুরু করার কথা ছিল ওএনজিসির। তেল ওঠার কথা ছিল ২০২০ সালের মার্চে। কিন্তু প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের রূপায়ণকারী সংস্থাগুলির বোঝাপড়ার অভাবে সেই লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে হয় চলতি বছরের শেষের দিক। এ বার সমস্যা দেখা দিয়েছে তেল উত্তোলনের বিভিন্ন পরিকাঠামোর (পাইপলাইন, প্ল্যাটফর্ম, স্টোরেজ ইত্যাদি) ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে। আর তা করতে গিয়ে নাকি তেল উত্তোলনে ২০২২ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক গড়িয়ে যেতে পারে। আর গ্যাস উৎপাদন হতে পারে ২০২৩ সালের মে মাসে। এক আধিকারিকের বক্তব্য, ক্লাস্টার-২ থেকে দিনে ৪৭,০০০ ব্যারেল এবং বছরে ২০ লক্ষ ব্যারেল তেল ওঠার কথা। গ্যাস উৎপাদন হওয়ার কথা ২২০ ঘন মিটার। সেই হিসাবে প্রকল্পের দেরির ফলে দেশের অতিরিক্ত ১৮,০০০ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা খরচ হবে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এটি যথেষ্ট রক্ষণশীল হিসাব। ব্যারেল প্রতি অশোধিত তেলের দাম ৮২ ডলার, প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট গ্যাস ৬.১৩ ডলার এবং ডলারের দর ৭৫ টাকা ধরে।’’