প্রতীকী ছবি।
সংসদ ভবনের সামনে রেড ক্রস রোডে খাবারের দোকানে কাজ করেন বিহারের বিরুজু যাদব। বয়স আঠাশের আশেপাশে। মাস গেলে রোজগার হাজার আটেক। অর্থনীতির ভাষায় অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক। অন্তর্বর্তী বাজেটে এঁদের জন্যই প্রধানমন্ত্রী শ্রম-যোগী মানধন প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সেখানে ২৯-৬০ বছর পর্যন্ত মাসে ১০০ টাকা করে দিতে হবে। একই টাকা দেবে কেন্দ্র। তা হলে ৬০ বছরে গিয়ে মাসে ৩ হাজার করে পেনশন মিলবে।
ঘোষণা শুনে বিরজুর প্রশ্ন, এত বছর ধরে মাসে ১০০ টাকা দিলে, মোট কত দিতে হবে? জানতে চাইছেন, ‘‘এখনই ৮ হাজার টাকায় পেট চলে না। অত দিন পরে ৩ হাজারে কী হবে?’’ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গড়ে ৫% মূল্যবৃদ্ধি ধরলেও, ৩১ বছর পরে ৩ হাজার টাকা দাঁড়াবে ৭০০ টাকায়। শুনে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তখন ৭০০ টাকায় কি এক দিনও পেট চলবে?’’
অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষিকা দীপা সিন্হার দাবি, প্রকল্পটিকে কোনও ভাবেই সামাজিক সুরক্ষা বলা যায় না। তাঁর যুক্তি, ২৯ বছর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কেউ মাসে ১০০ টাকা করে ৮% সুদের রেকারিং ডিপোজিটে জমা করলেও, বেশি লাভবান হবেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, অটল পেনশন যোজনাকেই নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এতে বিমা বা পেনশন তহবিল সংস্থারই লাভ হবে। শ্রমিক সংগঠন সিটু-র সভানেত্রী হেমলতা বলেন, ‘‘অসংগঠিত ক্ষেত্রের সব শ্রমিক সুবিধা পাবেন না। এ নিয়ে সরকার কতটা দায়বদ্ধ, তার প্রমাণ হল প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অথচ গরুর কল্যাণে সেই অঙ্ক ৭৫০ কোটি।’’ কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, আরও টাকা লাগলে দেওয়া হবে।