প্রতীকী ছবি।
স্বেচ্ছাবসর (ভিআরএস) প্রস্তাব জমার জন্য ৩০ দিনের সময়সীমা শেষ। সূত্রের খবর, দুই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল এবং এমটিএনএলের প্রায় ৯৩ হাজার কর্মী-আধিকারিক সেই আবেদন জানিয়েছেন। তবে এখনও অক্টোবর ও নভেম্বরের বেতন হয়নি সেখানে। অবিলম্বে তা মেটানোর দাবিতে আজ, বুধবার বিএসএনএলের সব অফিসে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে সংস্থার কর্মী-আধিকারিকদের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ, অল ইউনিয়ন্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন্স অব বিএসএনএল (এইউএবি)। এই পরিস্থিতিতে, সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে ভিআরএসের আবেদন গ্রহণ শেষ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ৪জি স্পেকট্রাম পাওয়া-সহ ওই পরিকল্পনার বাকি ক্ষেত্রে অগ্রগতি স্পষ্ট নয়। সংস্থাকে চাঙ্গা করতে এ বার কী করা হবে, ধোঁয়াশা তা নিয়েও।
গত অক্টোবরে বিএসএনএল, এমটিএনএলের পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনায় সায় দেয় মন্ত্রিসভা। ভিআরএস দিতে বাজেট থেকে ১৭,১৬৯ কোটি টাকার সাহায্য, দুই সংস্থার সংযুক্তি, ৪জি স্পেকট্রাম বণ্টন-সহ একগুচ্ছ প্রস্তাব ছিল তাতে। বিএসএনএলের ১.৫৩ লক্ষ কর্মী-আধিকারিকের মধ্যে ভিআরএসের যোগ্য ছিলেন প্রায় ১.০৪ লক্ষ। কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য ছিল ৮০ হাজার জনকে তা দেওয়া। আবেদনের সংখ্যা সেই লক্ষ্য ছাপিয়েছে।
তবে বেতন বাকি পড়ায় শীর্ষ স্তর থেকে সাধারণ কর্মী মহলে দানা বাঁধছে অসন্তোষ। বিতর্ক বেধেছে টেলিকম দফতর (ডট) থেকে বিএসএনএলে ডেপুটেশনে আসা কিছু আইটিএস পদমর্যাদার অফিসারেরা প্রাপ্য আদায়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায়। যাঁরা এখনও কেন্দ্রের অধীনে। ইন্ডিয়ান টেলিকম সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে ত্রিপাঠী জানান, আদালত ওই অফিসারদের নভেম্বরের বেতন-সহ বকেয়া মেটাতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রকে।
বিএসএনএলে স্বেচ্ছাবসরে সাড়া
• আবেদন জানালেন ৭৮,৫৬৯ জন কর্মী-আধিকারিক।
• ৩১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ৫০ বছর বা তার
বেশি হবে, তাঁদের জন্য আনা হয়েছিল ভিআরএস প্রকল্প। যোগ্য কর্মী-আধিকারিক ছিলেন ১,০৪,৪৭১ জন। সাড়া দিয়েছেন তার ৭৫.২%।
• গ্রুপ এ: ৪২৯৫ জন, গ্রুপ বি: ৯০১০ জন, গ্রুপ সি: ৫৪,৯৯৪ জন, গ্রুপ ডি: ৯৯৩৬ জন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার: ৩৩৪ জন।
• আবেদন জানিয়েও শেষ পর্যন্ত তা ফিরিয়ে নিয়েছেন ৫২৩৭ জন।
• যাঁদের আবেদনে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ সায় দেবেন, তাঁরা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসর নেবেন।
এইউএবি-র রাজ্যের আহ্বায়ক অনিমেষ মিত্রের অবশ্য দাবি, একই সংস্থায় বেতন বণ্টনে এমন বিভাজন ঠিক নয়। কর্মীদের সংগঠনগুলিও আপত্তি তুলেছে। তবে ত্রিপাঠীর বক্তব্য, তাঁরা সরকারি কর্মী হিসেবে প্রাপ্য দাবি করেই আদালতে গিয়েছিলেন। সংস্থার উচিত বাকিদের পাওনাও মিটিয়ে দেওয়া।
ভিআরএসের পরে সংস্থার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য কর্তৃপক্ষের পরের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল। সংবাদ সংস্থার খবর, এখন সংস্থায় ৫৫০ জন আইটিএস অফিসার। ডটের কাছে আরও ২০০ জনকে চেয়েছে বিএসএনএল। ত্রিপাঠীর দাবি, ২০১২ সালে আদালত ডটের আইটিএস অফিসারদের ফেরাতে বলেছিল। নির্দেশ মানা হয়নি। অথচ এখন সেই অফিসারেরা বেতন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘নৈতিক ভাবে কি বিএসএনএল আরও অফিসার চাইতে পারে?’’