ঋণের বোঝা বাড়ল রাজ্যের। চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী।
পাঁচ বছরে পশ্চিমবঙ্গের ঋণের বোঝা বেড়েছে ৪৮%। অতিমারির পরের দু’বছরে বৃদ্ধির হার ২৩%।
২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অন্যতম চিন্তার কারণ রাজ্যের ঘাড়ে চেপে থাকা ধারের বোঝা। মঙ্গলবার সংসদে রাজ্যগুলির ঋণ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৮ সালের মার্চের শেষে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা ছিল প্রায় ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের মার্চের শেষে সেই অঙ্কই দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫.৫০ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থাৎ, পাঁচ বছরে ঋণ বেড়েছে প্রায় ৪৮%।
অর্থ মন্ত্রকের পেশ করা পরিসংখ্যান বলছে, অতিমারি হানার পরে ঋণের বহর বেড়েছে বেশি। কোভিডের আগে, ২০১৯-২০ সালে রাজ্যের ঋণ ছিল প্রায় ৪.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা। তার পরে তা বেড়েছে ২৩%। মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী জানান, ‘‘বিভিন্ন কারণে রাজ্যগুলির বকেয়া ঋণের বোঝা বেড়েছে। উদয় প্রকল্প (বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির দেনার বোঝা রাজ্যের দেনার খাতায় যোগ হওয়া), কৃষি ঋণ মকুব, কোভিডের ফলে রাজস্ব আদায় কমে যাওয়া, অতিরিক্ত খরচ, আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ হওয়া। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে, রাজ্যগুলি নিয়মিত ঋণের টাকা শোধ করছে।’’
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুর বকেয়া ঋণ সব থেকে বেশি। প্রায় ৬.৫৬ লক্ষ কোটি টাকা। দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র। চতুর্থ পশ্চিমবঙ্গ। আর কর্নাটক রয়েছে পঞ্চম স্থানে।
অর্থনীতিবিদেরা মনে করাচ্ছেন, অর্থনীতির বহর বা জনসংখ্যার মাপের দিক দিয়ে দেখলে তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় বড় রাজ্য। আর এ রাজ্যে সরকারের নিজের হিসেবই বলছে, ২০২২-২৩ সালে বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৫.৮৬ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছবে। যার অর্থ, মাথা পিছু ঋণের বোঝা দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৫৮,০০০ টাকা।