—প্রতীকী চিত্র।
ভারতীয় রেলে সাধারণ লাইনের উপর ৭০% চাপই পড়ে পণ্যবাহী ট্রেনের কারণে। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, পণ্যবাহী করিডর কাজ শুরু করলে সেই চাপ কমবে। তখন যাত্রিবাহী ট্রেনও বেশি সংখ্যায় সময়মতো চলাচল করতে পারবে। গত অগস্টের মাঝামাঝি বিহারের শোননগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের অন্ডাল পর্যন্ত ৩৭৪.৫ কিলোমিটার পথে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকায় পণ্যবাহী করিডর সম্প্রসারণের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আসন্ন বাজেটে তার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দের সম্ভাবনা। তবে তার আগেই করিডরের সম্পূর্ণ হওয়া অংশের হাত ধরে এ রাজ্য লাভের মুখ দেখবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের নিউ খুর্জা স্টেশন থেকে রেওয়াড়ি পর্যন্ত পণ্যবাহী করিডরের ১৭৩ কিলোমিটার পথে ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক সূচনা (ভিডিয়ো মারফত) করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই নিউ খুর্জা স্টেশনই পূর্ব এবং পশ্চিম পণ্যবাহী করিডরকে জুড়ছে। সেখান থেকে পূর্বে বিহারের শোননগর পর্যন্ত নির্মাণ সম্পূর্ণ। পশ্চিমে উত্তরপ্রদেশের দাদরি থেকে গুজরাতের সানন্দ পর্যন্ত কাজও শেষ বলে দাবি উত্তর মধ্য রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশু উপাধ্যায়ের। রেল কর্তাদের আশা, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নিউ খুর্জা থেকে দাদরি জুড়বে। শোননগর থেকে অন্ডাল পর্যন্ত করিডর সম্পূর্ণ হতে লাগবে আরও প্রায় তিন বছর।
পশ্চিম বর্ধমানের খনি এবং শিল্প এলাকা লাগোয়া আসানসোল ডিভিশনের প্রধান লাইনে ট্রেনের চাপ থাকে প্রায় ১২৫%। রেলের দাবি, আলাদা পণ্যবাহী করিডর তা কমাবে। তবে নিউ খুর্জা থেকে দাদরি তাতে জুড়লেই এ রাজ্য থেকে পশ্চিম ভারতে কয়লা এবং ইস্পাত নিয়ে যাওয়া ছাড়াও উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানিতে সুবিধে হবে। প্রধানত অন্ডাল থেকে কয়লা ও ইস্পাত তুলে শোননগর পর্যন্ত সাধারণ লাইন ধরে যাওয়ার পরে পণ্যবাহী করিডরে ঢুকবে মালগাড়ি। এতে পরিবহণের খরচ কমবে। এখন পরিবহণে সড়ক পথে খরচ পড়ে পণ্যের দামের ১৩%। অন্ডাল-সহ সব পণ্যবাহী করিডর চালু হলে তা নামবে ৬ শতাংশে।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, শোননগর পর্যন্ত পূর্ব করিডর সম্প্রসারিত হওয়ার সুফল পেতে শুরু করেছে পূর্ব রেল। গত এপ্রিল-ডিসেম্বরে তাদের কয়লা পরিবহণ গত বছরের তুলনায় ১২% বেড়েছে, জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। রেল কর্তাদের দাবি, এর ফলে সংস্থার আয় প্রায় ১৫% বাড়বে। করিডরে পশ্চিমবঙ্গের জুড়ে যাওয়াও সময়ের অপেক্ষা। এ জন্য প্রয়োজনীয় জমির ৯৮ শতাংশ পাওয়া গিয়েছে।