প্রতীকী ছবি।
গত পাঁচ বছরে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংবহন ক্ষেত্রে ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা। আর এ বার বিদ্যুৎ বণ্টন পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে আগামী পাঁচ বছরে ২০,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। শনিবার বণিকসভা সিআইআইয়ের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে বণ্টন সংস্থার আয় তলানিতে, সেখানে এই লগ্নির জন্য টাকা কোথা থেকে আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মন্ত্রী নিজে অবশ্য টাকা জোগাড় ও সংস্থা কোন কোন পরিকাঠামো উন্নয়নে লগ্নি করবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি। বলেছেন, প্রচলিত ও অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং শিল্প, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরবিচ্ছিন্ন ও উন্নত পরিষেবা দেওয়াই বণ্টন সংস্থার লক্ষ্য।
এখন সংবহন সংস্থার অধীনে রাজ্যে ১৪৩টি হাইভোল্টেজ সাবস্টেশন ও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ৭০৫টি সাবস্টেশন রয়েছে। সূত্রের খবর, নতুন লগ্নির মাধ্যমে ছোট-মাঝারি সাবস্টেশন তৈরি ছাড়াও, আরও বেশি ট্রান্সফর্মার বসানো, বিদ্যুৎ সংবহনের ক্ষতি কমাতে পদক্ষেপ করার ভাবনাচিন্তা রয়েছে। তার পাশাপাশি পরিকল্পনা রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরতে প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু, জেলা শহরগুলিতে ভূগর্ভস্থ কেব্ল লাইন বসানোর মতো প্রকল্প তৈরিরও। বিদ্যুৎমন্ত্রী নিজেও যেমন এ দিন বলেছেন, বণ্টন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উন্নয়নে শিলিগুড়িতে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে স্মার্ট গ্রিড প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
রাজ্যে বিদ্যুতের ছবি
প্রচলিত ও অপ্রচলিত মিলিয়ে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১০,৪৯০ মেগাওয়াট।
মাথাপিছু বিদ্যুৎ খরচ বছরে ৭০৩ ইউনিট (২০১৯ এপ্রিলের হিসেব)।
গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের পুরো কাজ শেষ।
বণ্টন সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২ কোটি।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৫,০০০ টন কয়লা আসে রাজ্যের নিজস্ব খনিগুলি থেকে।
বর্তমানে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১৩০ মেগাওয়াট।
মোট চাহিদার ২% মেটায় অপ্রচলিত বিদ্যুৎ।
গত ক’বছরে রাজ্যের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎহীন গ্রামগুলিতে এই পরিষেবা পৌঁছনোয়। শোভনদেববাবুর দাবি, এ বছরই গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে বেড়েছে কৃষি ভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা এবং মাথাপিছু বিদ্যুৎ খরচও। তার উপরে সম্প্রতি হুগলির ব্যান্ডেল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারে ৫ মেগাওয়াটের ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই অপ্রচলিত ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে রাজ্য।