সম্পত্তি নথিভুক্তির মেয়াদ বাড়ল তিন মাস। — ফাইল চিত্র।
কোভিডে বেহাল আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করতে সম্পত্তি নথিভুক্তির (রেজিস্ট্রেশন) ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটি-তে যে ২% ছাড় দিয়েছিল রাজ্য, তার মেয়াদ ফুরোচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর। কাঁচামালের চড়া দাম এবং গৃহঋণে উঁচু সুদের জেরে ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম বাড়ায়, ক্রেতা টানতে সেই সুবিধা চালু রাখার আর্জি জানিয়েছিল নির্মাতা সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই। তা মেনে নিল সরকার। বৃহস্পতিবার অর্থ দফতর জানিয়েছে, ছাড়ের মেয়াদ বেড়ে হচ্ছেপরের ৩১ মার্চ। মেয়াদ অবশ্য আগেও কয়েক দফা বেড়েছিল। মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকছে সম্পত্তির ‘সার্কল রেট’-এ (কোনও এলাকায় জমি বা সম্পত্তি সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম যে দামে নথিভুক্ত হয়) ১০% ছাড়ের সুবিধাও। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ক্রেডাই।
অতিমারির কামড়ে আবাসন বিক্রি ঠেকেছিল তলানিতে। দেশবাসীর বড় অংশের আর্থিক অনিশ্চয়তা ব্যবসাকে চাঙ্গা করা কঠিন করে তোলে। বহু সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন আটকে যায়। তাই স্ট্যাম্প ডিউটি ও সার্কল-রেটে ছাড় দেয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্য। যাতে খরচ বাঁচানোর সুবিধা দিয়ে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনা এবং নথিভুক্তিতে ক্রেতার আগ্রহ বাড়ানো যায়।
তবে শিল্পের আশঙ্কা ছিল, কোভিডের জের কাটিয়ে ওঠায় রাজ্যে ছাড়ের সুবিধা তোলা হলে ফের বিমুখ হতে পারেন ক্রেতারা। কারণ ইতিমধ্যেই ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম কমপক্ষে ৫% বেড়েছে। তার উপরে চড়া সুদের জেরে ঋণ শোধের মাসিক কিস্তির বোঝা বাড়ায় অনেকে বাড়ি কেনার পরিকল্পনা পিছোচ্ছেন। রাজ্যের সিদ্ধান্তে তাই খুশি শিল্প। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ক্রেডাইয়ের (ওয়েস্ট বেঙ্গল) প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা বলেন, ‘‘সুদ বাড়ায় ক্রেতার বাড়তি খরচের কিছুটা পুষিয়ে দেবে এই ছাড়। অনেকেই মার্চের মধ্যে ফ্ল্যাট-বাড়ির লেনদেন সারতে চাইবেন।’’
তাঁদের দাবি, রাজ্যেরও এতে লাভহবে। চলতি অর্থবর্ষে স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি থেকে সরকারের আয় ৮০০০ কোটি টাকা ছাড়াবে। গত বছর ছিল ৭০০০ কোটি। সুশীল জানান, ‘‘২০-২৫ বছর আগে সম্পত্তি কেনাবেচা করেও অনেকে তা নথিভুক্ত করেননি। এখন ছাড়ের সুবিধা নিতে করাচ্ছেন। ফলে রাজ্যের আয় হচ্ছে।’’