বিদ্যুৎ চুরি আটকে ও নানা ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি চালিয়ে গত অর্থবর্ষে বাড়তি ১৭০ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। বিদ্যুৎ কর্তাদের দাবি, এই পথে এতটা অতিরিক্ত আয় আগে কখনও হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ছিল বিদ্যুতের মাসুল বাড়ানোর পরিবর্তে ক্ষতি কমিয়ে আয় বাড়ানো। কিন্তু ২০১১ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে বিদ্যুৎ চুরি রুখতে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যু হয়। আর তারপর থেকে বণ্টন এলাকায় হুকিং বিরোধী অভিযান কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ওই ঘটনার পরে কয়েক বছর চুরি রুখে বা অন্যান্য ভাবে বিদ্যুতের ক্ষতি আটকে বণ্টন সংস্থার বাড়তি আয় হয়েছে বড়জোর ১০-১৪ কোটি। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে ফের আদায় বাড়তে থাকে। ২০১৬-১৭ সালে তা ছিল প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ কর্তাদের দাবি, বণ্টন সংস্থার বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষেত্রে চুরি-সহ অন্যান্য ক্ষতি রোখা ও নজরদারির জন্য নিজস্ব যে বিভাগ (সিকিউরিটি অ্যান্ড লস প্রিভেনশন সেল) রয়েছে, সেখানকার ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের তৎপরতাতেই ওই খাতে আয় নজির গড়েছে। অভিযুক্তের থেকে জরিমানা আদায়ের মতো ঘটনা ঘটেছে বিস্তর। সম্প্রতি বণ্টন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে সংস্থার ক্ষতি প্রতিরোধ বিভাগ বিস্তারিত রিপোর্টও পেশ করেছে। সূত্রের দাবি, ঠিক হয়েছে চুরি রুখতে সব দিক থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং সতর্ক ভাবে এ বছর আরও জোরালো পদক্ষেপ করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে অশান্তি এড়ানো যায়।
এ দিকে, বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ১০% বিদ্যুৎ কর্মীদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আপাতত কিছুটা খুশির হাওয়া সরকারি বিদ্যুৎ মহলে। এই বকেয়ার দাবিতে সরকারি বিদ্যুৎ কর্মীদের ইউনিয়নগুলি গত তিন বছর ধরে আন্দোলন করছিল। এই পরিস্থিতিতে আয় বাড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ খাতে বণ্টন সংস্থার প্রতি বছর যে বিপুল লোকসান হয়, তা বিভিন্ন উপায়ে কমিয়ে আনার উপরেই জোর দেওয়ার কথা বলছে রাজ্য। বিদ্যুৎ কর্তাদের একাংশের দাবি, প্রশাসনিক পদক্ষেপে চুরি-সহ অন্যান্য ক্ষতি বন্ধ খাতে বড় অঙ্কের আয় হয়েছে ঠিকই। তবে তা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে আরও।