—প্রতীকী চিত্র।
পরিবেশ সহায়ক জ্বালানি এবং প্রযুক্তিতে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে বহু দেশ। দেরিতে হলেও সেই পথে পা রেখেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন (বিজিবিএস) শুরুর আগে তাতে যোগ দিতে আসা ব্রিটেনের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের উদ্দেশে মঙ্গলবার রাজ্যের বার্তা, পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, দূষণহীন জ্বালানি এবং পরিবেশ সহায়ক প্রযুক্তিতে জোর দিচ্ছে তাঁদের সরকার। এই ক্ষেত্রেই ব্রিটিশ শিল্পমহলকে লগ্নির ডাক দেন তিনি।
কলকাতায় ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশন ও বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার এ দিন এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ব্রিটেনের প্রতিনিধি দল, রাজ্যের শিল্পমহল এবং সরকারকে নিয়ে। বিজিবিএসে ৫৭ জনের সবচেয়ে বড় দল এসেছে ব্রিটেন থেকে। যে দেশ ইতিমধ্যেই পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও জ্বালানির ক্ষেত্রে সহায়তা দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা ভারতকে। ওই সভায় ফিরহাদ জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার প্রথাগত জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে পরিবেশবান্ধবের দিকে এগোচ্ছে। তবে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, চার্জিং স্টেশনের মতো পরিকাঠামোর অভাব সেই পথে বড় বাধা। তাই সেখানে পুঁজি ঢালতে উদ্যোগী হোক ব্রিটেনের শিল্প। ভবিষ্যতে হাইড্রোজেন জ্বালানি নির্ভর গাড়িতেও রাজ্য আগ্রহী, জানান ফিরহাদ।
পরিবেশ সহায়ক পরিবহণ ক্ষেত্রের দক্ষ কর্মী গড়তে ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কর্মসূচির আওতায় নানা বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে দু’দেশ। তারই আওতায় পশ্চিমবঙ্গের কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে মিলে একটি রূপরেখার উদ্বোধন হয় এ দিন। কলকাতায় ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্রের খবর, সেই রূপরেখা অনুযায়ী রাজ্যে মূলত বৈদ্যুতিক পরিবহণ ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী গড়তে একটি বিশেষ কেন্দ্র চালু হবে। এই ধরনের গাড়ি তৈরি, তার রক্ষণাবেক্ষণ-সহ সার্বিক ভাবে সহায়ক পরিবেশ গড়ার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম চালুর পরিকল্পনা সেখানে। আগামী মার্চের মধ্যে কেন্দ্রের জায়গা এবং তার পরিচালনার জন্য আগ্রহপত্র চাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার আশা। ভবিষ্যতে হাইড্রোজেন জ্বালানির বিষয়টিও তার আওতায় আসতে পারে। পাশাপাশি বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা স্ন্যাপ-ই-র সঙ্গে মিলে ব্রিটিশ সহায়তায় বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ৫০ জন মহিলা চালকের প্রশিক্ষণও আগামী সপ্তাহে শুরুর আশা।
এ দিন সভার পরে ফিরহাদ এ বারের বিজিবিএস থেকে অন্তত তিন লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন। সভায় রাজ্যে গত ১২ বছরের সাফল্যের নানা খতিয়ান দিয়ে তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে দেশের সেরা রাজ্য করে তোলার পথে এগিয়ে চলেছেন।