ফাইল চিত্র
ভারতে যাতে তাঁকে ফিরতে না হয়, সে জন্য চেষ্টার অন্ত ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হলেন বসে যাওয়া বিমান সংস্থা কিংফিশারের কর্ণধার বিজয় মাল্য। ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে কিংফিশারের জন্য নেওয়া বিপুল ধার শোধ না-করেই চুপিসারে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে যাঁর বিরুদ্ধে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির পরে যিনি ইতিমধ্যেই এ দেশে পলাতক অপরাধীর তকমা পেয়েছেন। এবং দেশের আদালতে যাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, আর্থিক নয়ছয়, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ বেআইনি আর্থিক লেনদেনের একাধিক মামলা ঝুলছে। গত এপ্রিলে প্রত্যর্পণের নির্দেশের বিরুদ্ধে মাল্যের আবেদন খারিজ করেছিল লন্ডন হাইকোর্ট। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার যে অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেল তা-ও।
আইন বলছে, মাল্য যদি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন না-জানান, তবে ভারত-ব্রিটেন প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে ২৮ দিনের মধ্যে ভারতে ফেরাতে হবে তাঁকে। সেই আবেদনের অনুমতিই না-পাওয়ায়, এ বার মাল্যের ভারতে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এখন এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে আদালতের নির্দেশে সিলমোহর দেবেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেল।
সিবিআইয়ের তরফে দাবি, মাল্যকে ভারতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় লন্ডন হাইকোর্টের এই নির্দেশ তাদের পক্ষে বিরাট জয়। ব্রিটেনের আদালতও সিবিআইয়ের পক্ষেই কথা বলেছে। ৬৪ বছরের বয়সি মাল্য শেষ পর্যন্ত আইনি ভাবেই পরাস্ত হলেন।
৯০০০ কোটি টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে মাল্যের বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালের মার্চের পর থেকেই তিনি লন্ডনে রয়েছেন। তাঁকে ভারতের হাতে প্রত্যার্পনের পক্ষে রায় দিয়েছিল ব্রিটেনের নিম্ন আদালত। ভারতে ফিরতে না চেয়ে, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন মাল্য। এ বার নীতিগত ভাবে মাল্যের সামনে প্রত্যর্পণ আটকানোর পথ বলতে রয়েছে একমাত্র ইউরোপের মানবাধিকার আদালতের দ্বারস্থ হওয়া।
এ দিকে এই দিনই মাল্য ফের এক টুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে তাঁর ঋণ নেওয়া ১০০% টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছেন। আর বারবার যে তাঁর এই আবেদন উপেক্ষিত হচ্ছে সে প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেছেন। বলেছেন, শর্তহীন ভাবে তাঁর টাকা ফেরত নিয়ে সব কিছু শেষ করা হোক।
এর আগেও বিজয় মাল্য টুইটে অভিযোগ করেছিলেন, কিংফিশারের ধার নেওয়া ১০০% টাকা তিনি ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু ব্যাঙ্কগুলি ওই টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: টিডিএস-টিসিএসের ব্যাখ্যা দিল কেন্দ্র