Digital Service Tax

ভারতের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ, পাল্টার ইঙ্গিতও

ভারতে ব্যবসা করে কিন্তু স্থায়ী অফিস নেই, এমন বিদেশি ই-কমার্স সংস্থাগুলির উপর ২% ডিজিটাল পরিষেবা কর বসিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারতের ডিজিটাল পরিষেবা করকে (ডিএসটি) বৈষম্যমূলক তকমা দিল আমেরিকার ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের তদন্তমূলক রিপোর্ট (ইউএসটিআর)। এই করকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কর নীতির বিরোধী তো বটেই। বিশ্ব বাণিজ্যে পাঁচিলও। ভারত অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রকের দাবি, বিদেশি ই-কমার্স সংস্থাগুলির উপরে কর বসানোর লক্ষ্য আসলে সমান সমান প্রতিযোগিতার জমি তৈরি করা। যে কারণে দেশীয় সংস্থাগুলিকেও কর দিতে হয়।

Advertisement

ভারতে ব্যবসা করে কিন্তু স্থায়ী অফিস নেই, এমন বিদেশি ই-কমার্স সংস্থাগুলির উপর ২% ডিজিটাল পরিষেবা কর বসিয়েছে কেন্দ্র। যা কার্যকর হয়েছে গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ আমেরিকা। এ নিয়ে তদন্ত চালিয়েছে সে দেশের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা। যার সম্পূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে প্রতিটি ছত্রে ডিএসটির বিরুদ্ধে ঝরে পড়েছে অসন্তোষ। এমনকি একে বাণিজ্যে পাঁচিলের নামান্তর ব্যাখ্যা করে এর বিরুদ্ধে পাল্টা কর চাপানোর ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কী ধরনের কর বসানো হতে পারে কিংবা অবিলম্বে তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হবে কি না, সে কথা বলেনি ইউএসটিআর।

আমেরিকার তোপ

Advertisement

• যে ১১৯টি ই-কমার্স সংস্থার উপরে ভারতে ২% ডিজিটাল পরিষেবা কর (ডিএসটি) চাপতে পারে, তার ৮৬টিই (কিংবা ৭২%) আমেরিকার।

• ডিএসটি আমেরিকার অনলাইন সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা।

• অযৌক্তিক এবং আন্তর্জাতিক কর নীতির পরিপন্থীও বটে।

• কাকে, কেন তা দিতে হবে, তাই নিয়ে ধোঁয়াশাও আছে।

• আমেরিকার সংস্থাগুলির উপর এতে দ্বৈত কর চাপছে।

• বাণিজ্যে পাঁচিল উঠছে।

• এমন কিছু ডিজিটাল পরিষেবায় কর বসছে, যেগুলিতে বিশ্বের কোথাও বসে না।

• কর বিধি মানতে গিয়ে বিপুল খরচ হচ্ছে সংস্থাগুলির।

বাণিজ্য মন্ত্রকের দাবি

• ডিএসটি মোটেই আমেরিকান ই-কমার্স সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নয়, ভারতের বাইরের সব সংস্থাকেই সমতাবিধানকারী ওই কর দিতে হবে।

• ভারতের ডিজিটাল সংস্থাগুলিকেও কর দিতে হয়।

• ২০২০-র ১ এপ্রিল থেকেই কার্যকর ওই কর অতীতের কোনও লেনদেনে বসবে না।

• শুধু ভারতে ব্যবসা করে যে আয় হবে, তার উপরে বসবে ওই কর।

• ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য।

• ভারতে লেনদেন করলে সরকারকে কর দিতেই হবে। কেন্দ্রের সেই অধিকারও আছে। বাস্তবে সংস্থাটির ভারতে অফিস না-থাকলেও।

আমেরিকার বাণিজ্য মহলের দাবি, ডিএসটিতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের দেশের ই-কমার্স সংস্থাগুলিই। এই কর চালু হওয়ার ফলে ভারতে তাদের উপর অতিরিক্ত ৩ কোটি ডলারের বোঝা চাপছে। সেই অর্থ মেটানো-সহ গোটা কর ব্যবস্থা মেনে চলতে বইতে হবে মোটা অঙ্কের খরচের ধাক্কা। চোট লাগবে ব্যবসায়। এটা আমেরিকার বিরুদ্ধে ভারতের বৈষম্যমূলক আচরণ বলেও তোপ দেগেছে ইউএসটিআর। যদিও কেন্দ্রের দাবি, ডিজিটাল কর বসেছে সমস্ত বিদেশি ই-কমার্স সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেই। ফলে আলাদা করে আমেরিকার প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ ভুল। তা ছাড়া, ভারতে চলা লেনদেনে কর নেওয়ার অধিকার সরকারের আছে। সেটা বেআইনি হতে পারে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement