—প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার শেয়ার বাজারে অব্যাহত রক্তক্ষরণ। টানা লোকসানের মুখ দেখায় ওয়াল স্ট্রিটের লগ্নিকারীদের মাথায় হাত। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই প্রায় দু’হাজার পয়েন্ট পড়ে যায় বাজারের সূচক। ফলে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ এর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পারস্পরিক শুল্ক নীতিকেই দায়ী করেছেন।
এ দিন বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে শুরু হয় চরম অস্থিরতা। প্রথমেই ১,৭০০ পয়েন্ট নেমে যায় এই শেয়ার সূচক। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে ৮০০ পয়েন্ট লাফিয়ে ওঠে সেটি। এর পর আবার ৪১৪ পয়েন্ট নেমে যায় ওই শেয়ারের লেখচিত্র।
একই রকমের ছবি দেখা গিয়েছে এস অ্যান্ড পি ৫০০-তেও। বাজার খোলার পর প্রথম ঘণ্টায় এই স্টকের সূচক নামে ১.৩ শতাংশ। তার পর কিছু ক্ষণ উপরের দিকে উঠে আবার সেটি বেশ কিছুটা নেমে যায়। সোমবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ এস অ্যান্ড পি ৫০০-তে মোট চার শতাংশের পতন দেখা গিয়েছে।
এ ছাড়া নাসডাক কম্পোজিট কমেছে ০.৮ শতাংশ। মার্কিন দালাল সংস্থাগুলির দাবি, কোভিড অতিমারির পর আর কখনওই এত বড় ঝড়ের মুখে পড়েনি ওয়াল স্ট্রিট। গত দু’মাসে এস অ্যান্ড পি ৫০০ কমেছে ২০ শতাংশ। শেয়ার সূচকের এ হেন পতনকে ‘ভালুক বাজার’ (বিয়ার মার্কেট) বলে উল্লেখ করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল পারস্পরিক শুল্ক নীতি চালুর কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আগামী ৯ তারিখ থেকে নতুন নিয়মে আমদানি করা পণ্যের উপর থেকে শুল্ক আদায় করবে তাঁর প্রশাসন। পারস্পরিক শুল্ক নীতির ঘোষণার পর থেকেই অস্থির হয়ে ওঠে ওয়াল স্ট্রিট।
১৯৮৭ সালের ১৯ অক্টোবর, আমেরিকার শেয়ার বাজারের ইতিহাসে দিনটি ‘কালো সোমবার’ (ব্ল্যাক মানডে) হিসাবে পরিচিত। ওই তারিখে এক দিনে ২২.৬ শতাংশ পড়ে যায় ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ। ৩৮ বছর পর ওয়াল স্ট্রিটে এ রকম রক্তপাত। এমনটা যে হতে পারে সম্প্রতি সেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
এত কিছু সত্ত্বেও ট্রাম্প নির্বিকার। পারস্পরিক শুল্ক নীতি থেকে সরে আসতে নারাজ তিনি। উল্টে বর্ষীয়ান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের যুক্তি, ‘‘বিশ্বের বহু দেশ এত দিন আমেরিকাকে লুট করে এসেছে। পারস্পরিক শুল্কের ওষুধ তাদের উপর কাজ করছে।’’ মার্কিন শেয়ার বাজারের রক্তক্ষরণের দায় এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।