ভারতকে শুল্কের রাজা আখ্যা দিয়ে বারবার বিঁধেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এ বার এ দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই ভারতের উঁচু শুল্কের দেওয়াল নিয়ে আপত্তি তুললেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব উইলবার রস। একই সঙ্গে, আমদানি শুল্ক ছাড়া অন্যান্য যে সমস্ত নীতি ও নিয়ন্ত্রণের কারণে ভারতের বাজারে আমেরিকার সংস্থা ব্যবসা করতে অসুবিধায় পড়ে, সে দিকেও আঙুল তুললেন তিনি।
মঙ্গলবার দিল্লিতে ওই একই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সুরেশ প্রভুর অবশ্য আশ্বাস, দুই সরকারের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে দুই দেশের কর্পোরেট মহলের জন্যই সুবিধাজনক নীতি তৈরি সম্ভব।
একশো জন মার্কিন শিল্পপতিকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে এসেছেন রস। এ দিন দিল্লিতে বাণিজ্য সংক্রান্ত সভায় তাঁর অভিযোগ, গাড়ি, বাইক, মদ, কৃষিপণ্য ইত্যাদিতে ভারতে আমদানি শুল্ক মাত্রাতিরিক্ত চড়া। যেমন, গাড়ির উপরে মার্কিন মুলুকে শুল্ক যেখানে ২.৫%, সেখানে ভারতে তা ৬০%। মোটরসাইকেল এবং মদেও ওই হার যথাক্রমে ৫০ ও ১৫০%। কৃষিপণ্যেও গড় করের হার ১১৩.৫%। কিছু ক্ষেত্রে তা চোখ কপালে তোলা ৩০০%!
রসের দাবি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে এই সমস্ত করের হার হওয়া উচিত আসলে অনেক কম। কিন্তু ভারত তা না মানার কারণে এ দেশের বাজার ধরতে মুশকিলে পড়েন মার্কিন রফতানিকারীরা। তাঁর মতে, শুধু শুল্ক নয়, অন্যান্য নীতি ও নিয়ন্ত্রণও যথেষ্ট বেকায়দায় ফেলে মার্কিন শিল্প মহলকে। সেই কারণেও এ দেশে ব্যবসা করা মার্কিন সংস্থাগুলিকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়।
বাইকে চড়া কর নিয়ে হালে বহু বার ভারতকে বিঁধেছেন ট্রাম্প। ই-কমার্স নীতি নিয়েও আপত্তি শোনা গিয়েছে মার্কিন সংস্থাগুলির মুখে। এ দেশে ব্যবসা করতে হলে, বিদেশি সংস্থাগুলিকে ভারতেই সার্ভারে সব ডেটা (তথ্য) জমা রাখতে হবে বলে যে ঘোষণা কেন্দ্র করেছে, তার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে মার্কিন সংস্থাগুলি। এ দিন এই সমস্ত বিষয়েই মুখ খুলেছেন রস। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘সাবধান করেছেন’ যাতে ইরানের তেল কেনার মতো সুবিধা খারিজ হওয়ার পাল্টা হিসেবে মার্কিন পণ্যে কর চাপানোর পথে দিল্লি না হাঁটে। প্রভু অবশ্য এ দিন সংঘাতে না গিয়ে বলেছেন ঐকমত্যের কথাই।