প্রতীকী ছবি।
আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্ককে ডিবিএস ব্যাঙ্কের ভারতীয় শাখার (ডিবিএস ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়া) সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। মঙ্গলবার সেই সংক্রান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবক। তাদের বক্তব্য, এই ভাবে কার্যত বিনা প্রতিযোগিতায় বিদেশি ব্যাঙ্ককে দেশের ব্যাঙ্কিং শিল্পের বাজার ছেড়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বরং কোনও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হোক লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্ককে।
লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কের প্রধান দফতর চেন্নাইয়ে। কলকাতাতেও ব্যবসা রয়েছে তাদের। ৯৪ বছর ধরে চলা বেসরকারি ব্যাঙ্কটি এক সময়ে শুধু ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে ঋণ দিত। অভিযোগ, বড় শিল্পের ঋণের দিকে জোর দেওয়ার পর থেকেই তাদের অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) বাড়তে থাকে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কড়া নজরদারির আওতায় নিয়ে আসে তাদের। আর মঙ্গলবারই বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি হয়েছে ব্যাঙ্কটির উপরে। আগামী ৩০ দিনে ২৫,০০০ টাকার বেশি তুলতে পারবেন না গ্রাহক। সেই সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে সংযুক্তিকরণের খসড়া প্রস্তাব। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তা কার্যকর হওয়ার কথা। বুধবার লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নিযুক্ত প্রশাসক টি এন মনোহরন জানান, সময়সীমার মধ্যে ব্যাঙ্ক দু’টির সংযুক্তির ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
কিন্তু এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইবক। তাদের বক্তব্য, ওই প্রস্তাব জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ব্যবসা বাড়ানোর বিপুল সুযোগ রয়েছে। অনেক দিন ধরেই সহজ পথে সেই বাজার ধরতে চাইছে বিদেশি ব্যাঙ্কগুলি। সেই রাস্তাই খুলে দেওয়া হচ্ছে তাদের সামনে। সংগঠনের সভাপতি সুনীল কুমারের বক্তব্য, পুরনো বহু বেসরকারি ব্যাঙ্ক স্বাধীনতার আগে থেকে দেশকে সেবা করে আসছে। পরিচালিত হচ্ছে কার্যত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মতোই। এই ধরনের একটি ব্যাঙ্ককে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে কোনও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গেই জুড়ে দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কটির চরিত্র অপরিবর্তিত থাকবে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বক্তব্য অবশ্য অন্য। এ দিনই মনোহরন জানান, ডিবিএস ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার পুঁজি এবং হিসেবের খাতা যথেষ্ট শক্তিশালী। সংযুক্তিকরণের পরে তৈরি হওয়া ব্যাঙ্কটিতে নতুন করে ২৫০০ কোটি টাকার পুঁজি ঢালবে তারা। যাতে ঋণ দেওয়া বাড়ানো যায়। লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের উদ্দেশে তাঁর আশ্বাস, আমানত নিরাপদেই আছে। তা ফেরত দেওয়ার মতো যথেষ্ট নগদও ব্যাঙ্কটির হাতে রয়েছে।