বেকারত্বের হার বৃদ্ধি দেশে। প্রতীকী ছবি।
দেশে বেকারত্বের হার চার বছরে সব থেকে কম হয়েছিল সেপ্টেম্বরে (৬.৪৩%)। সামান্য স্বস্তির সেই বাতাবরণ উধাও অক্টোবরে। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে প্রকাশ, গত মাসে দেশের সার্বিক বেকারত্ব আবার ৭.৭৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা দু’মাসে সর্বাধিক। দায়ী মূলত গ্রামাঞ্চলের কাজের বাজার। যেখানে ওই হার আবার ৮.০৪ শতাংশে চড়েছে। তার আগের মাসে ছিল ৫.৮৪%। শহরাঞ্চলে অবশ্য ৭.৭০% থেকে একটু নেমে হয়েছে ৭.২১%। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এতে নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নেই। ৭% যথেষ্ট চড়া। বহু দিন হল এর নীচে নামেনি শহুরে বেকারত্ব। অবস্থা এমনই যে, একাংশ কাজ খোঁজাই ছেড়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি বর্ষার ফসল কাটা হয়। শীতকালীন শস্যের বীজ বপন শুরু নভেম্বরে। মধ্যবর্তী সময়ে গ্রামে কৃষি নির্ভর বড় অংশের কাজ থাকে না। তবে অর্থনীতির অধ্যাপিকা মহানন্দা কাঞ্জিলালের দাবি, গ্রামে কাজ কমার কারণ— এক, অনিয়মিত বৃষ্টিতে বহু জায়গায় চাষের কাজ ধাক্কা খাওয়া। দুই, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি না হওয়া। যে কারণে কোভিডে শহর থেকে গ্রামে ফেরা বহু মানুষের কাজ নেই।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের মতে, একে তো দেশে বড় ও নতুন কারখানা তৈরি হচ্ছে না। তার উপরে গ্রামাঞ্চলে ১০০ দিনের কাজেও জোর দেওয়া হচ্ছে না তেমন ভাবে। ফলে ধাক্কা খাচ্ছে কর্মসংস্থান। পটনা আইআইটির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলছেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধি চাহিদা কমিয়েছে। বর্ধিত সুদের হার ঋণের খরচ বাড়িয়েছে। বহু সংস্থার সম্প্রসারণ তাই থমকে। নিয়োগও বন্ধ। উল্টে উৎপাদন এবং খরচ কমানোর তাগিদে একাংশ কর্মী কমাচ্ছে। এই সবই বেকারত্ব বৃদ্ধিতে রসদ জুগিয়েছে। মহানন্দার কথায়, ‘‘আশঙ্কার বড় কারণ, শহুরে শিক্ষিত বেকারদের হতাশ হয়ে কাজ খোঁজা বন্ধ করা আর উৎপাদনমুখী শিল্পে ভাটা। এ দেশে মহিলাকর্মীও সব চেয়ে কম।’’