প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে রাজ্যে স্থানীয় বিধিনিষেধ পর্যায়ক্রমে শিথিল হয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ডের গতি বাড়ছে। তার হাত ধরে শহর ও গ্রাম-সহ সারা দেশেই কমতে শুরু করেছিল বেকারত্বের হার। কিন্তু জুলাইয়ের শেষের দিকে পৌঁছে কাজ তৈরির সেই পথকে ফের কিছুটা অমসৃণ দেখাচ্ছে।
পরামর্শদাতা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ২৫ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে সারা দেশে বেকারত্বের হার এক ধাক্কায় পৌঁছে গিয়েছে ৭.১৪ শতাংশে। আগের সপ্তাহেই যা ৫.৯৮% ছিল। গ্রামাঞ্চলে সেই হার ৫.১০% থেকে বেড়ে হয়েছে ৬.৭৫%। শহরে তা অপেক্ষাকৃত কম বাড়লেও ছাড়িয়ে গিয়েছে ৮ শতাংশের সীমা। ৭.৯৪% থেকে বেড়ে হয়েছে ৮.০১%। বস্তুত, শহরে বেকারত্বের হার অনেক দিন ধরেই গ্রামাঞ্চল এবং জাতীয় গড়ের তুলনায় চড়া। সম্প্রতি সেই ছবির উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করছিল কেন্দ্র। কিন্তু এ দফার সমীক্ষা রিপোর্ট নতুন করে দুশ্চিন্তা বাড়াল। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের উদ্বেগ, এর পরে সত্যিই করোনার তৃতীয় ঢেউ অর্থনীতির উপরে আছড়ে পড়লে তার কতটা প্রভাব কর্মসংস্থানের উপরে পড়বে!
গত বছর মার্চে করোনার হানার পর থেকেই দেশে কাজের বাজার বিপর্যস্ত। দীর্ঘ লকডাউনের ধাক্কায় সেই সময়ে এপ্রিল এবং মে মাসে বেকারত্বের হার ২০% ছাড়িয়ে যায়। এর পরে লকডাউন শিথিল হওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তা ধীরে ধীরে নামতে থাকে। কিন্তু অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ সেই পরিস্থিতি বদলে দেয়। সংক্রমণ রোধ করতে রাজ্যগুলি স্থানীয় লকডাউন এবং বিধিনিষেধের পথে হাঁটায় ফের চড়তে চড়তে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে সারা দেশে বেকারত্বের হার দুই অঙ্ক পার করে ফেলে। যা আবারও কমতে থাকে সেই বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার ফলে। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আসা এবং বর্ষার মরসুমের উপরে নির্ভর করেই বদলাচ্ছিল কাজের বাজারের অবস্থা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে ধাক্কা দেওয়ার সময়ে বেকারত্বের হার যে জায়গায় পৌঁছেছিল, পরিস্থিতি এখনও পর্যন্ত তার তুলনায় ভাল। কিন্তু সেই উন্নতি ধাক্কা খাওয়ার ফলেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালের অনুকূল পরিস্থিতি এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প সত্ত্বেও গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার এতটা বেড়ে যাওয়া কম উদ্বেগের বিষয় নয়।
সিএমআইই-র কর্তা মহেশ ব্যাস নিজের নিবন্ধে কাজের পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে আশাপ্রকাশ করলেও কিছু উদ্বেগের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘২০২২-এর মার্চের মধ্যেও যে দেশের প্রকৃত জিডিপি করোনার আগের অবস্থায় ফিরতে পারবে না, তা আরও স্পষ্ট হচ্ছে।’’