প্রতীকী ছবি।
অক্টোবরের প্রবণতা বজায় থাকল নতুন মাসের গোড়াতেও। সারা দেশে বেকারত্বের হার আরও মাথা তুলল। উদ্বেগের কেন্দ্রস্থলে আবারও গ্রামাঞ্চল। ৬ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে সেই হার দাঁড়িয়েছে ৮.৬৮%। যেখানে দেশে তা ৮.৪২%। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র গবেষণা রিপোর্টে এমনই উঠে এসেছে।
সেপ্টেম্বরে বেকারত্বের হার নেমেছিল চার বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে (৬.৪৩%)। কিন্তু গত মাস থেকে ফের তা মাথা তুলতে থাকে। ৬.৪৩% থেকে পৌঁছে যায় ৭.৭৭ শতাংশে। সিএমআইই-র রিপোর্টের যে দিকটি উদ্বেগের তা হল, গত মাসের বেকারত্ব বৃদ্ধির ছবিটা বজায় রয়েছে চলতি মাসের গোড়াতেও। আর তা ঊর্ধ্বমুখী। সেখানে জানানো হয়েছে, আলোচ্য সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ৬.৬৯% থেকে এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ৮.৪২ শতাংশে। শহরে সেই হার বাড়লেও তা তুলনায় কম। ৭.৩৯% থেকে হয়েছে ৭.৮৭%। কিন্তু গ্রামে তা ৬.৩৭% থেকে হয়েছে ৮.৬৮%। অর্থাৎ, বেড়েছে ২ শতাংশ বিন্দুরও বেশি। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, সপ্তাহের পরিসংখ্যান দিয়ে কাজের বাজারের গতিপ্রকৃতি ঠিক ভাবে বোঝা যায় না।
সিএমআইই-র রিপোর্টে ব্যাখ্যা, গত মাসে বেকারত্বের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি, কাজের বাজারে অংশগ্রহণের হার কমেছে। এই দু’টি ঘটনা একসঙ্গে ঘটার অর্থ সরাসরি কাজ কমে যাওয়া। সমীক্ষকদের হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবরে সারা দেশে ৭৮ লক্ষ কাজ কমেছিল। কর্মহীনের সংখ্যা বেড়েছিল ৫৬ লক্ষ। আর প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ কাজের বাজার থেকেই নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন। ঠিক যে ঘটনা ঘটে কাজের বাজারে পা রাখা মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত চাকরি না থাকলে। ফলে সব মিলিয়ে কাজ খোঁজা মানুষের সংখ্যাও ৪৩.২ কোটি থেকে কমে হয়েছিল ৪২.৯৮ কোটি। এই নিট হ্রাস প্রায় পুরোটাই গ্রামাঞ্চলে। যেখানে অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষের সংখ্যা অনেকটা বেশি। তবে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল, গত এক বছরে বারবার কৃষি ক্ষেত্রে কাজ কমলেও হালে ঘটেছে ঠিক উল্টো। বিপুল কর্মসংস্থান কমেছে পরিষেবা ক্ষেত্রে। বিশেষ করে গ্রামীণ খুচরো ব্যবসায়। যে প্রবণতা বজায় রয়েছে নভেম্বরের গোড়াতেও।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) ফাঁস হওয়া রিপোর্টে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে দেশের বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৬.১ শতাংশে। যা চার দশকের সর্বোচ্চ। সেই সময়ে বিষয়টি অস্বীকার করলেও নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর মোদী সরকার রিপোর্টের সত্যতা স্বীকার করে নেয়। কিন্তু তার পর থেকে বেকারত্ব বা কাজের বাজারের পূর্ণাঙ্গ কোনও পরিসংখ্যান সরকারের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সিএমআইই-র পরিসংখ্যানকে মর্যাদা দিলে বলতে হয়, বেকারত্বের হার এখন সেই সময়ের চেয়েও বেশি।