—প্রতীকী ছবি।
অতিমারি পার করে ভারতীয় অর্থনীতির চাকায় গতি ফিরলেও আর্থিক বৃদ্ধির সুফল যে সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না, সেই ছবি স্পষ্ট হয়েছে একাধিক আর্থিক ও উপদেষ্টা সংস্থার সমীক্ষায়। চিন্তা বাড়িয়েছে চড়া বেকারত্বের হার। তবে এই সব অভিযোগ উড়িয়ে মোদী সরকার বার বার ভারতকে তুলে ধরছে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতির দেশ হিসেবে। এই পরিস্থিতিতে এ বার কেন্দ্রেরই উপদেষ্টা নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের কথাতেও স্পষ্ট হল একই উদ্বেগ। অন্তর্বর্তী বাজেটের আগের দিন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীণ অর্থনীতিবিদের বক্তব্য, অসাম্য যে বাড়ছে, বিক্রির গতি কমাই তার প্রমাণ। প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছয়নি কাজ তৈরিও।
করোনাকালে সারা বিশ্বেই যে সাধারণ রোজগেরে গৃহস্থের সঙ্গে বিত্তশালীর আর্থিক ফারাক বেড়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সমীক্ষায়। ভারতেও একই সমস্যা উঠে এসেছে বিভিন্ন রিপোর্টে। প্রমাণ হিসেবে তারা কখনও দেখিয়েছে তুলনায় কম দামি সাধ্যের ফ্ল্যাট-বাড়ির (অ্যাফর্ডেবল হাউসিং) তলানি ছোঁয়া বিক্রিকে, কখনও ভোগ্যপণ্য ব্যবসার ঝিমুনিকে। তুলে ধরেছে, কী ভাবে একই কারণে কম দামি ছোট গাড়ির সেরা বাজার ভারতে দখল বাড়ছে বিলাসবহুলগুলির। কমছে দু’চাকার বিক্রি। যার অন্যতম বড় বাজার গ্রামাঞ্চল। চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং সেই কারণে বহু মানুষের হাতে বাড়তি টাকার অভাব প্রকট হয়েছে চাহিদা প্রত্যাশা মাফিক না বাড়ার পরিসংখ্যানেও। এ দিন রাজীবের কথায়, ‘‘বিক্রিবাটার দুর্বলতার মধ্যে এই বিষয়টাই ক্রমশ প্রতিফলিত হচ্ছে। জিডিপি বৃদ্ধির হার যেখানে ৭ শতাংশের আশেপাশে, সেখানে চাহিদা বৃদ্ধি ৫ শতাংশের নীচে। যা কিনা সাধারণ গৃহস্থের খরচ কমানো এবং আর্থিক বৈষম্য বৃদ্ধির প্রমাণ।’’ এর আগে অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছিলেন, ভারতের অর্থনীতি সার্বিক ভাবে বাড়ছে ঠিকই। তবে সেটা সমাজের একটা অংশের হাত ধরে। কিছু ধনী আরও বিত্তবান হচ্ছেন বলে। বাকিরা কার্যত ‘মন্দায়’।