ফাইল চিত্র।
টেস্লার কর্ণধার ইলন মাস্কের দেওয়া অধিগ্রহণ প্রস্তাব আটকাতে শুক্রবারই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে টুইটার। কিন্তু সেই ‘পয়জ়ন পিল’ বা ‘বিষৌষধি’-তে আদৌ কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে কর্পোরেট মহলে। বিশেষত, এর আগে যেখানে দেখা গিয়েছে এই ধরনের ব্যবস্থা নিলেও শেষ পর্যন্ত সংস্থা বিক্রি আটকানো যায়নি।
জানুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে ন’শতাংশের বেশি শেয়ার কেনার পরে বৃহস্পতিবার টুইটার কিনতে প্রস্তাব দেন মাস্ক। শেয়ার পিছু দর দেন ৫৪.২ ডলার। মোট লগ্নি ৪৩০০ কোটি ডলারের বেশি। এর আগে মাস্ককে পর্ষদে আনার প্রস্তাব দেয় টুইটার। শর্ত দেওয়া হয়, ১৪.৯ শতাংশের বেশি নিতে পারবেন না তিনি। কিন্তু তা মানতে নারাজ মাস্ক হাত বাড়িয়েছেন পুরো সংস্থার দিকেই। তাঁকে ঠেকাতেই টুইটারের অস্ত্র পয়জ়ন পিল।
কর্পোরেট জগতে একাধিক রকমের পয়জ়ন পিল চালু রয়েছে। তারই একটি মাস্কের প্রস্তাব খারিজের চেষ্টা হিসেবে টুইটারের আরও বেশি শেয়ার ছাড়ার উদ্যোগ। যাতে তিনি যে দরে ১৫% শেয়ার নেবেন, অন্য লগ্নিকারীরা তার চেয়ে কম দামে তা কিনতে পারেন। ২০২৩-এর ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, পয়জ়ন পিল ব্যবস্থা জোর করে সংস্থা কেনার চেষ্টা আটকাতে কাজে লাগানো হয় ঠিকই। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে তা দর বাড়াতেও ব্যবহার করা হয়। টুইটারও সেই রাস্তা খোলা রেখেছে। সে ক্ষেত্রে কোনও রফা হলে এই ব্যবস্থা খারিজ হবে।
তবে বহু ক্ষেত্রে পয়জ়ন পিল নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কথাও মনে করাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। ২০০৩ সালে পিপ্ল-সফট কিনতে ওর্যাকল্-এর দেওয়া ৫১০ কোটি ডলারের প্রস্তাব তুলে ধরছেন তাঁরা। যেখানে ১৮ মাস দুই সংস্থার লড়াই চলেছিল। শেষ পর্যন্ত ওর্যাকল্ সংস্থাটি কিনতে সায় পেলেও তাদের দর দিতে হয় প্রায় দ্বিগুণ, ১১১০ কোটি ডলার।
একাংশের মতে, টুইটার কিনতে কী ভাবে অর্থ জোগাবেন তা না-জানালেও, প্রায় ২৬,৫০০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক এবং বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি হিসেবে মাস্কের হাতে তহবিল রয়েছে। তিনি যদিও জানিয়েছেন, যে দর তিনি হেঁকেছেন, সেটাই চূড়ান্ত। টুইটারের পদক্ষেপের পরে এখনও মুখ না-খুললেও, আগেই প্রস্তাব মানা না-হলে আইনি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। বলেছেন, শেয়ারহোল্ডারের স্বার্থরক্ষা করা পর্ষদের কর্তব্য। এখন এই দ্বৈরথ কোন দিকে গড়ায়, সে দিকে চোখ বিশ্বের।