বড় বাড়িতে ফোন মেলে না, আসরে ট্রাই

সস্তা মাসুলের কাঁধে ভর করে গত কয়েক বছরে মোবাইলের ব্যবহার বেড়েছে।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মোবাইল পরিষেবার হাল হাতেকলমে বুঝতে সাধারণত রাস্তাতেই সমীক্ষা চালায় নিয়ন্ত্রক ট্রাই। কিন্তু বাইরে পরিষেবা যদিও বা ঠিক থাকে, অনেক সময়েই অভিযোগ ওঠে, বড় বড় সরকারি-বেসরকারি ভবনের ভিতরে পরিষেবার হাল বেশ খারাপ। ফোনে কথা বলার পাশাপাশি, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়েও বারবার হোঁচট খেতে হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনের ভিতরেও সরেজমিনে সমীক্ষা শুরু করেছে ট্রাই। সম্প্রতি কলকাতার কয়েকটি প্রশাসনিক ভবন ও মেট্রো রেলে সমীক্ষা চালিয়েছে তারা।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এ বছরের গোড়ায় কেব্‌ল ও ডিটিএইচ পরিষেবায় নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পরে পরিষেবার হাল যাচাই করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছেছিলেন ট্রাইয়ের কর্তারা। মোবাইল পরিষেবার ক্ষেত্রেও খানিকটা সেই পথেই হাঁটতে চাইছেন তাঁরা।

সস্তা মাসুলের কাঁধে ভর করে গত কয়েক বছরে মোবাইলের ব্যবহার বেড়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, মাসুল যা-ই হোক না কেন, বহু সময়েই সুষ্ঠু পরিষেবা মেলে না। ৪জি ইন্টারনেট পরিষেবার আশ্বাস থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তার গতি ২জির বেশি হয় না। সরকারি দফতর বা বেসরকারি অফিসের ভিতরে পরিস্থিতি আরও খারাপ। গ্রাহকদের অনেকের অভিযোগ, টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের ভিতরে উপযুক্ত পরিকাঠামোর আশ্বাস দিলেও তা ঠিক মতো গড়ে না।

Advertisement

অভিযোগ

• বড় বড় ভবনের ভিতরে মোবাইল পরিষেবা প্রায়ই পাওয়া যায় না।
• কথা বলার সময়ে মাঝ পথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন
হয়ে যায়।
• ইন্টারনেটের গতিও শ্লথ।
ট্রাইয়ের পদক্ষেপ
• গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি ভবন, আবাসনে পরিষেবার হাল বুঝতে সমীক্ষা।
• অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো কতটা উপযুক্ত, তা
খতিয়ে দেখা।
• ঘাটতি চিহ্নিত করে সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা।
• পরিকাঠামো গড়তে সংস্থাগুলি বাধা পাচ্ছে
কি না, তা খতিয়ে দেখা।
টেলি শিল্পের বক্তব্য
• বাড়ির ভিতরে পরিকাঠামো গড়ার কথা সংস্থাগুলির লাইসেন্সের শর্তে নেই।
• তা সত্ত্বেও উদ্যোগী হচ্ছে পরিষেবা সংস্থাগুলি।
• ১২ মাসে দেশে ১০ লক্ষ ওয়াই-ফাই হট স্পট।

সূত্রের খবর, রাজ্যে নিউ সেক্রেটারিয়েট, ওয়েবেল ভবনের ভিতরে ইতিমধ্যেই এক দফা সমীক্ষা চালিয়েছে ট্রাই। একই ভাবে পরিষেবার মান খতিয়ে দেখা হয়েছে মেট্রো রেলের যাত্রাপথেও। আগামী দিনে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবন, সরকারি দফতর, বেসরকারি ভবন, বড় আবাসন, শপিং মলেও এমন সমীক্ষা চালাবে তারা।

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সাধারণত টাওয়ারের মাধ্যমেই মোবাইল পরিষেবা দেওয়া হয়। বাড়ি বা ভবনের ভিতরে আলাদা করে বিশেষ পরিকাঠামো (ইন-বিল্ডিং সলিউশন্স বা আইবিএস) গড়তে হয়। ওয়াই-ফাই হট স্পটও তৈরি করা হয়। কারণ, বড় দেওয়াল বা সিলিংয়ের জন্য সিগন্যাল বাড়ির ভিতরে সব সময় ঠিক ভাবে পৌঁছতে পারে না।

টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল আর এস ম্যাথুজ জানান, বাড়ির ভিতরের পরিষেবার জন্য আলাদা ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সংস্থাগুলির লাইসেন্সের শর্তে নেই। টেলিকম শিল্পের একাংশের দাবি, টাওয়ারের মতোই অনেক ক্ষেত্রে বাড়ি বা ভবনের ভিতরে আইবিএস বসানোর অনুমোদনও মেলে না। ম্যাথুজ জানান, বাধ্যতামূলক না হলেও সংস্থাগুলি ভবনের ভিতরের পরিষেবার উপরে জোর দিচ্ছে। আবাসন, রেল স্টেশন, বিমানবন্দরে সেই পরিকাঠামো গড়তে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলছে। আগামী ১২ মাসে দেশ জুড়ে সংস্থাগুলি ১০ লক্ষ ওয়াই-ফাই হট স্পট গড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement