জিও ‘জয়ী’, ক্ষুব্ধ পুরনোরা

আইইউসি ছাঁটাইয়ের ফরমান

বাজারে আসার পর থেকেই জিও-র বক্তব্য ছিল, পুরনো সংস্থাগুলি এই বাবদ বিপুল আয় করে। তা উঠে গেলে সস্তায় পরিষেবা পাবেন গ্রাহকরা। তাই সেটি তুলে দেওয়া হোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

জল্পনা ছিলই। তা মিলিয়ে মঙ্গলবার ট্রাই জানাল, অক্টোবর থেকেই কমছে দেশের মধ্যে মোবাইল পরিষেবার ‘ইন্টারকানেকশন ইউসেজ চার্জ’ (আইইউসি)। ২০২০ থেকে তা একেবারেই উঠে যাবে।

Advertisement

এ দিন টেলিকম নিয়ন্ত্রকের এই ঘোষণা নতুন করে বিতর্ক উস্‌কে দিয়েছে এই শিল্পে। কারণ, মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স-জিও আইইউসি তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও, গোড়া থেকেই তার বিরোধী পুরনো সংস্থাগুলি। এমনকী তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।

এক সংস্থার সংযোগ থেকে আর একটিতে যেতে প্রয়োজন হয় পরিকাঠামো। তাই গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসুল নেওয়ার পাশাপাশি অপর সংস্থার থেকে এ জন্য আলাদা ভাবে আইইউসি নেওয়া হয়। আগে কম থাকলেও, ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয় মিনিটে ১৪ পয়সা। বছর খানেক সব পক্ষের আলোচনা শোনার পরে এ দিন ট্রাই জানিয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে তা কমে হবে মিনিটে ৬ পয়সা। আর ২০২০ থেকে শূন্য।

Advertisement

বাজারে আসার পর থেকেই জিও-র বক্তব্য ছিল, পুরনো সংস্থাগুলি এই বাবদ বিপুল আয় করে। তা উঠে গেলে সস্তায় পরিষেবা পাবেন গ্রাহকরা। তাই সেটি তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু ভোডাফোন, এয়ারটেল, আইডিয়ার মতো পুরনো সংস্থাগুলির দাবি ছিল, পরিকাঠামো গড়তে বিপুল লগ্নি করতে হয়েছে তাদের। তা মাথায় রেখে বরং আইইউসি বাড়ানো হোক।

এ দিন টেলিকম শিল্পের একাংশের দাবি, এখন কথা বলার খরচ প্রায় নেই। আইইউসি-র সঙ্গে সম্পর্ক নেই গ্রাহক-মাসুলেরও। তা ছাড়া জিও কথা বলার জন্য যেখানে পয়সাই নেয় না, সেখানে আইইউসি কমলে লাভ কী?

এই শিল্পের সংগঠন সিওএআই-এর ডিজি রাজন এস ম্যাথুজ বলেন, ‘‘আইইউসি এখন ১৪ পয়সা হলেও বাস্তবে সংস্থাগুলির খরচ পড়ে ৩২ পয়সা। তা আরও কমলে পুরনো সংস্থাগুলির আয় কমবে ৪-৫ হাজার কোটি টাকা। শূন্যে নামলে, অন্তত ছ’হাজার কোটি। কিন্তু সেখানে একটি সংস্থারই সুবিধা হবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।’’ এ ক্ষেত্রে তিনি জিও-র নাম না-করলেও, ইঙ্গিত তার দিকেই বলে টেলিকম শিল্পের দাবি।

কিন্তু আইইউসি তো জিও-ও গোনে? এ ক্ষেত্রে অম্বানীদের সংস্থার নাম না-করে ম্যাথুজের যুক্তি, কোনও একটি সংস্থা থেকে অন্য সংস্থার ফোনে অনেক বেশি সংখ্যায় ফোন এলে, প্রথম সংস্থাটির সেই বিপুল সংখ্যক ফোনের খরচ বইতে হয় অন্য সংস্থাগুলিকে। কিন্তু তাদের গ্রাহক সংখ্যা কম থাকলে, তাদের কাছে আসা অন্য সংস্থার ফোনের সংখ্যাও কম হয়। ফলে আইইউসি তুলে দিলে প্রথম সংস্থাটির যতটা লাভ, তার চেয়ে অন্যদের ক্ষতি অনেক বেশি। তাই তাঁর মতে, আইইউসি হ্রাস বা প্রত্যাহারের আগে সার্বিক ভাবে
টেলি পরিষেবা শিল্পে বৈষম্য দূর হওয়া জরুরি।

এ নিয়ে বিএসএনএলের ডিরেক্টর আর কে মিত্তল জানান, তাঁদের যেমন অন্য সংস্থাকে আইইউসি দিতে হয়, তেমনই তাঁদেরও অন্য সংস্থার থেকে ওই বাবদ আয় হয়। তাই সার্বিক ভাবে লাভ-ক্ষতির হিসেব না-দেখে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement