কেব্ল টিভি, ডিটিএইচের মতো পরিষেবায় এ মাসেই চালু হতে যাওয়া নতুন নিয়ম আর চ্যানেলের দর নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও। তার মধ্যেই বুধবার টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের দাবি, তা চালু হলে আসলে পছন্দের চ্যানেল দেখতে খরচ কমবে গ্রাহকের। একই সঙ্গে পুরো বিষয়ে স্বচ্ছতা আসায় তার সুফল পাবেন গ্রাহক এবং এই পরিষেবায় যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।
কিন্তু ট্রাইয়ের এই দাবি এখনও পুরোপুরি মানতে নারাজ লোকাল কেব্ল অপারেটর (এলসিও) ও মাল্টি সার্ভিস অপারেটরদের (এমএসও) অনেকেই। সিটি কেব্লের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া বলেন, ‘‘যাঁরা সীমিত সংখ্যক চ্যানেল দেখবেন, তাঁদের খরচ হয়তো কমবে। কিন্তু বেশি চ্যানেল দেখলে বাড়বে।’’ ইঙ্গিত, একই টাকায় কম চ্যানেল পাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
চ্যানেল সংস্থাগুলি তাদের পে চ্যানেলের সর্বোচ্চ দাম (জিএসটি ধরে) কত স্থির করেছে, তা ট্রাই নিজেদের ওয়েবসাইটে (www.trai.gov.in) গ্রাহকের তথ্য সংক্রান্ত বিভাগে দিয়েছে। সেখানে নতুন নিয়ম নিয়ে ট্রাইয়ের বক্তব্য জানান সেক্রেটারি এস কে গুপ্ত। তাঁদের দাবি, সমীক্ষা বলছে, টিভি থাকা পরিবারের ৯০ শতাংশেরও বেশি বাস্তবে ৫০টি বা তার চেয়েও কম চ্যানেল দেখে। অন্য একটি সূত্রের আবার দাবি, পশ্চিমবঙ্গে তা ২০টিরও কম।
ট্রাইয়ের দাবি, শুধুমাত্র পছন্দের চ্যানেল দেখার জন্য এখনকার চেয়ে নতুন নিয়মে দাম কম পড়বে। ফ্রি টু এয়ার (এফটিএ) চ্যানেলের কোনও দাম নেওয়া যাবে না। কিন্তু এখন চালু নিয়মে কোনও কোনও এমএসও, ডিটিএইচ, আইপিটিভি বণ্টনকারী সংস্থা কিছু এফটিএ চ্যানেলের দাম নিত। দেশে ৮৭৩টি চ্যানেলের মধ্যে ৫০০টিরও বেশি এফটিএ।
চ্যানেল দেখার ক্ষমতার মাসুলের (নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি) সঙ্গে এফটিএ-র দামের ভুল ব্যাখ্যা করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ ট্রাইয়ের। গ্রাহক পছন্দ জানানো সত্ত্বেও ২৯ ডিসেম্বর থেকে তাঁর টিভিতে সম্প্রচার বন্ধ হবে বলে যে বার্তা ছড়াচ্ছে, তা-ও ঠিক নয়।
নিয়ন্ত্রকের দাবি, নতুন নিয়মে এলসিওর আয় কমার আশঙ্কাও অমূলক। যুক্তি, নিশ্চিত আয়ের ব্যবস্থা করতেই নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি ফিয়ের বন্দোবস্ত। এমএসওর সঙ্গে আলোচনার সুযোগও রয়েছে। বরং ট্রাইয়ের পাল্টা দাবি, আগে টাকা দেওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে বিভিন্ন বিতর্কের জেরে চ্যানেল বন্ধ হওয়ার মতো ঘটনা রোখার রক্ষাকবচ থাকছে নতুন নিয়মে। কিন্তু সুরেশের দাবি, গ্রাহক সংখ্যা আর বাড়ছে না। তাই গ্রাহকের খরচ কমলে এলসিও, এমএসওর আয়ও কমবে। পাশাপাশি, নতুন নিয়মে সব তথ্য ঠিকমতো তৃণমূল স্তরে না পৌঁছনোর জন্যই বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৮ ডিসেম্বর মাঝরাত থেকে কেব্ল টিভি, ডিটিএইচ পরিষেবায় চালু হচ্ছে নতুন নিয়ম। তাতে গ্রাহকদের চ্যানেল বাছতে হবে নতুন করে। খরচ নির্ভর করবে মূলত দু’টি জিনিসের উপরে— (১) কতগুলি চ্যানেল দেখার অধিকার (নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি) নেওয়া হচ্ছে (২) যে সমস্ত পে চ্যানেল নেওয়া হচ্ছে, সেগুলির মাসুল।