Sensex

পতনে বন্ধ বাজার, ফের খুলতেই দৌড়

এক ধাক্কায় সূচক নামে ৩৩৮০.৫৯ পয়েন্ট (প্রায় ১১%)।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

ওঠা-নামার নাগরদোলায় চড়ে দিনভর পরতে পরতে রং বদলাল ‌সূচক। ছবি: এপি।

উত্তাল শেয়ার বাজারে নজিরবিহীন উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়ে রইল শুক্রবারের লেনদেন। ওঠা-নামার নাগরদোলায় চড়ে দিনভর পরতে পরতে রং বদলাল ‌সূচক।

Advertisement

সকালে লেনদেন শুরু হয়েছিল নিফটি এবং সেনসেক্সের বিপুল পতন দিয়ে। বাজার খোলার ১৫ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে নিফ্‌টি ৯৬৬.১০ পয়েন্ট (১০.০৭%) নেমে হয় ৮৬২৪ পয়েন্ট। সূচক পতনের মাত্রা ছাড়ানোয় সক্রিয় হয় সার্কিট ব্রেকার। ৪৫ মিনিট বন্ধ থাকে এনএসই। গত ১২ বছরের মধ্যে ভারতের শেয়ার বাজারে এমন ঘটনা এই প্রথম।

একই দৃশ্য সেনসেক্সে। সেখানে এক ধাক্কায় সূচক নামে ৩৩৮০.৫৯ পয়েন্ট (প্রায় ১১%)। মুছে যায় লগ্নিকারীদের প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। এখানেও সার্কিট ব্রেকার সক্রিয় হয়ে ৪৫ মিনিট বন্ধ থাকে লেনদেন।

Advertisement

এই অবস্থায় প্রায় সকলেই বৃহস্পতিবারের প্রায় ৩০০০ পয়েন্ট পতনের রেকর্ড ভাঙার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু আবার বাজার খুলতেই ম্যাজিকের মতো শুরু হয় লাগামছাড়া দৌড়। নিফ্‌টি দিন শেষ করেছে ৩৬৫ পয়েন্ট উপরে উঠে, ৯৯৫৫.২০ অঙ্কে। আর সেনসেক্স দিনের মাঝে পতনের তলানি থেকে ৫৩৮০ পয়েন্ট ওঠায় তৈরি হয়ে যায় লেনদেন চলাকালীন সব চেয়ে বেশি উত্থানের রেকর্ড। দিন অবশ্য শেষ হয় ফের কিছুটা নেমে এসে, তবে আগের দিনের থেকে হাজার পয়েন্টের বেশি উপরে। দিনের শেষে লগ্নিকারীরা ফিরে পেয়েছেন ৩.৫৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। তবে গত চার দিনে নিট হিসেবে হারানোর অঙ্কই বেশি, ১৫ লক্ষ কোটি।

করোনাভাইরাসের কামড়েই পড়ছে বাজার। কিন্তু এ দিন আচমকা এত উত্থানের কারণ কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে— এক, পড়তি বাজারে বহু ভাল শেয়ার কম দামে কেনার হিড়িক। দুই, করোনা যুঝতে বিভিন্ন দেশ ও শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলির পদক্ষেপের বার্তা। তিন, বিশ্বের বিভিন্ন বাজারের উত্থান (এশিয়ার বাজার অবশ্য মিশ্র ছিল)। চার, জানুয়ারিতে ভারতে শিল্পোৎপাদনের হার বৃদ্ধি ও ফেব্রুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি কমা। যা আগামী দিনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ফের সুদ কমানোর আশা উস্কে দিয়েছে।

তবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলছেন, ‘‘বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে মনে করার কারণ নেই। বরং পতনে ইন্ধন জোগানোর মাল-মশলা এখনও মজুত। করোনা নিয়ে বিভিন্ন দেশ বিধিনিষেধ চাপানোয়, ব্যবসা-বাণিজ্য ভুগতে পারে। অন্যান্য দেশের বাজার পড়লে, এ দেশেও তার ধাক্কা লাগতে পারে। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার বেচতে থাকলে কী হবে, তা-ও বলা যাচ্ছে না।’’ এ দিন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির অবশ্য আশ্বাস, অস্থির বাজারে লগ্নিকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যে কোনও পদক্ষেপ করতে তারা তৈরি।

দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দে-র অবশ্য দাবি, ‘‘বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বেশ কিছু দিন বাদে বিশ্ব বাজারে এ দিন দর বেড়েছে অশোধিত তেলের। এগুলি ভাল লক্ষণ। কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভাইরাস মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ভারতের বাজার উঠবে কি না, তা বিশ্বের উপরে অনেকটা নির্ভরশীল।’’

এ দিন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতে ৬০২৭.৫৮ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে। তবে ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি কিনেছে ৫৮৬৭.৯০ কোটির। ডলারের নিরিখে টাকার দামও রেকর্ড নীচে নেমেছিল এক সময়। পরে ৪৮ পয়সা কমে এক ডলার হয় ৭৩.৮০ টাকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement