Provident Fund

চুক্তিভিত্তিক কর্মীদেরও পিএফের সুবিধার দাবি

সম্প্রতি রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের বেশ ক’জন ঠিকা কর্মীকে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনশিয়োরেন্স (ইএসআই) প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ ০৫:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরে কর্মরত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) আওতায় আনার দাবি তুলল ট্রেড ইউনিয়নগুলির একাংশ। সম্প্রতি প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক কমিটির সভায় প্রস্তাবটি তোলে তারা। ট্রেড ইউনিয়ন সূত্রের দাবি, সভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের শ্রমসচিব বরুণকুমার রায় তা বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এ ধরনের পদক্ষেপের আর্থিক চাপও কম নয়।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের বেশ ক’জন ঠিকা কর্মীকে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনশিয়োরেন্স (ইএসআই) প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। এই পদক্ষেপের ফলে ওই বিভাগের পাম্প অপারেটর এবং ভাল্‌ভ অপারেটরেরা উপকৃত হবেন। এ ব্যাপারে রাজ্য সম্প্রতি বিবৃতিতে জানিয়েছে, যে সমস্ত ঠিকাদার সংস্থা সরকারি বরাত নিয়ে কাজ করে, তাদের বাধ্যতামূলক ভাবে পিএফ ও ইএসআইয়ে নথিভুক্ত হতে হবে। দরপত্রের ফর্মের সঙ্গেই দিতে হবে দুই প্রকল্পে নথিভুক্তির সার্টিফিকেট। অন্যথা তারা বরাত পাবে না।

নিয়ম ও বাস্তব ছবি

Advertisement

• স্থায়ী কর্মীদের পাশাপাশি সমস্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীকেও পিএফের সুবিধা দেওয়া বাধ্যতামূলক।

• কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের আওতায় থাকা বহু চুক্তিভিত্তিক কর্মীই এই সামাজিক সুরক্ষা পান না।

• পশ্চিমবঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিশ, প্যারাটিচার-সহ অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা বিপুল। তাঁদের বড় অংশ পিএফের বাইরে।

• সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে কর্মরত পাম্প অপারেটর ও ভাল্‌ভ অপারেটরদের পিএফে আনা হয়েছে। নির্দেশ, সরকারি বরাত নিয়ে কাজ করা ঠিকাদার সংস্থাকে পিএফ, ইএসআইয়ে নথিভুক্ত থাকতে হবে।

• বিহারে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের পিএফের আওতায় আনা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের স্থায়ী করা ও পিএফে আনতে পদক্ষেপ করেছে ওড়িশা।

সক্রিয় ইউনিয়ন

• পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দফতরের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পিএফের সুবিধা দেওয়ার দাবি তুলেছে ইউনিয়ন।

• পিএফের আঞ্চলিক কমিটির সভায় প্রস্তাবটি তুলেছে তারা।

ইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরের অধীনে যে সব চুক্তিভিত্তিক কর্মী আছেন, তাঁদেরও পিএফের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি। সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষাধিক কর্মীকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করেছে রাজ্য। তাঁদের সুরক্ষার জন্যই এই দাবি। এ নিয়েমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছি।’’ দাবি সম্পর্কে শ্রমসচিব বলেন, ‘‘প্রস্তাবটি খুবই ভাল। তবে এর সঙ্গে শ্রম দফতর ছাড়াও আরও কিছু দফতর জড়িত। আমরা তাদের কাছে প্রস্তাবটির ব্যাপারে চিঠি লিখেছি। সেটি এখন রাজ্য সরকারের বিবেচনাধীন।’’

অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার রাজীব ভট্টাচার্য জানান, পিএফ আইনে স্থায়ী ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি সব চুক্তিভিত্তিক কর্মীকেও এই প্রকল্পে আনা বাধ্যতামূলক। ইপিএফও সূত্রের খবর, পূর্বাঞ্চলে ওড়িশা ও বিহারে ইতিমধ্যেই বহু চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মীকে পিএফে আনা হয়েছে। বিহারে ৩.৫৮ লক্ষ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক পিএফের সুবিধা পাচ্ছেন। ওড়িশায় সম্প্রতি ৫৭,০০০ চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে স্থায়ী করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য। ফলে ভবিষ্যনিধি প্রকল্পে আসবেন তাঁরাও। এর জন্য ওড়িশার বার্ষিক খরচ বাড়তে চলেছে ১৩০০ কোটি টাকা।

অশোকবাবুর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যাই এক লক্ষের বেশি। এ ছাড়াও সবুজ পুলিশ, বন সহায়ক, প্যারাটিচার ইত্যাদি পদে বহু কর্মী চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত। তাঁদের সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতেই পিএফের আওতায় আনার জন্য রাজ্যের কাছে দাবি জানিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement