গত বছর জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে নানা নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা এসে পড়েছিল সেখানকার পর্যটন শিল্পে। আগ্রহ থাকলেও সংশয়ের আবহে বেড়ানোর সেই পথ এড়িয়ে চলেছেন পর্যটকদের অনেকে। এপ্রিল থেকে ভ্রমণের নতুন মরসুমের শুরু। ব্যবসার চাকা ঘোরাতে ও পর্যটকদের আস্থা ফেরাতে তাই কলকাতায় এসে জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন সংস্থাগুলির কর্তাদের দাবি, সেখানের অবস্থা বেড়ানোর অনুকূল। পর্যটকদের আতঙ্কের কিছু নেই।
ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রের পর্যটন মেলায় এসেছে জম্মুর ১১টি ও কাশ্মীরের ২৮টি সংস্থা। তাদের স্টলে উঁকিঝুঁকি মারছেন অনেকেই। শুক্রবার সেখানে এম ইউসুফ, ওয়াসিম বশির, পবন শর্মা, তাহির আহমদের মতো বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার কর্তারা জানালেন, এপ্রিল-নভেম্বর প্রধানত জম্মু ও কাশ্মীরে বেড়ানোর মরসুম। বিশেষত অমরনাথ যাত্রার দিকে তাকিয়ে থাকেন তাঁরা। গত অগস্টের পরে ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছিল। কেউ কেউ সব মিলিয়ে বার্ষিক ব্যবসার খুব বেশি হলে ৩০% করতে পেরেছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সরকারি নিষেধাজ্ঞাও উঠে গিয়েছে।
কিন্তু এখনও সেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনার আঁচ যথেষ্ট। ইন্টারনেট চালু হলেও শুধু ২জি পরিষেবা মিলছে। সরকার আশ্বাস দিলেও যেন একটা চাপা আতঙ্কের পরিবেশ। ফলে প্রশ্ন থাকছেই, এই অবস্থায় ক’জন ভরসা করবেন সেখানে যেতে? সংশ্লিষ্ট সূত্রের একটি হিসেব বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-এ সেখানে পর্যটক কমেছে প্রায় ২৬ লক্ষ।
পর্যটন-কর্তাদের অবশ্য দাবি, পর্যটকেরা সুরক্ষিত। কাশ্মীরে না-যাওয়ার নির্দেশিকা আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে। ঘোরার জায়গাগুলির কোথাও সমস্যা নেই। কারও পাল্টা প্রশ্ন, সমস্যা থাকলে পর্যটকদের ডাক দিতাম কি? তবে ২জি পরিষেবা যে যথেষ্ট নয় তা মেনে নিয়ে তাঁরা জানান, ৪জি ও দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালুর আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
কলকাতায় জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন দফতরের কর্তা এহসান উল হক বলেন, পর্যটকদের আস্থা ফেরাতে চেষ্টা করছেন তাঁরা। সে জন্যই মেলা ও নানা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। যাতে সরাসরি পর্যটন সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলে ভরসা পান আগ্রহী পর্যটক।
মেলার আয়োজক সংস্থার পক্ষে সঞ্জীব আগরওয়াল ও রাজ্যে পর্যটক শিল্পের সংগঠন ‘টাবের’ প্রেসিডেন্ট সোমনাথ চৌধুরীরও বক্তব্য, সরাসরি কথা বললে মানুষের মনে আস্থা বাড়ে। পর্যটন শান্তির বার্তা দেয়। আর এহসানের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরে আসা ভিন্ রাজ্যের পর্যটকদের তালিকায় শীর্ষে গুজরাত। তার পরে পশ্চিমবঙ্গ। তাই ঘুরে দাঁড়াতে এ রাজ্যকে পাখির চোখ করতে চান তাঁরা।