জীবন বিমা মূলত তিন রকম।
এখনও বিমা বলতে এনডাওমেন্ট পলিসির কথাই বোঝেন অধিকাংশ জন। কিন্তু এই পরিবারে তো আরও দুই সদস্য আছে। তাদের সকলেরই সংক্ষিপ্ত পরিচিতি—
এনডাওমেন্ট প্ল্যান
• সাধারণত এই প্রকল্পে প্রথমে বিমার অঙ্ক (সাম অ্যাশিওর্ড) ঠিক হয়। অর্থাৎ, গ্রাহক প্রথমে ঠিক করেন কত টাকার বিমা করবেন। সেই অঙ্ক ও তাঁর বয়সের ভিত্তিতেই ঠিক হয় প্রিমিয়াম (ব্যতিক্রম থাকতে পারে)।
• সাধারণত মাসে, তিন মাস অন্তর, ছ’মাস পরপর অথবা বছরে এক বার প্রিমিয়াম দেওয়া যায়।
• বিমার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রাহক বেঁচে থাকলে, নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তাঁকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। মেয়াদ শেষ হলে বোনাস-সহ টাকা ফেরত পান তিনি। বোনাস কী হবে, তা ঠিক করে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাই।
এই প্রকল্পে বোনাস কমবেশি হতে পারে। কিন্তু যে টাকা প্রিমিয়াম বাবদ জমা দেওয়া হয়েছে, তার পুরোটাই ফেরত পাওয়া যায়।
• মেয়াদ শেষের আগে গ্রাহক মারা গেলে, তাঁর নমিনি বোনাস-সহ সাম অ্যাশিওর্ডের পুরোটা ফেরত পান। কত প্রিমিয়াম জমা পড়েছে, তা এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়। তবে বোনাস হিসেব হয় গ্রাহক যে দিন মারা গেলেন, সেই সময় পর্যন্ত।
ইউলিপ
• এই বিমা পলিসির তহবিল খাটে মূলধনী বাজারে। শেয়ারে ও ঋণপত্রে। তাই ঝুঁকি এখানে তুলনায় বেশি।
• সাধারণত এতে প্রথমে প্রিমিয়াম ঠিক হয়। তার পর তার ভিত্তিতে ঠিক হয় বিমার অঙ্ক। সেই অঙ্ক হয় বছরে প্রিমিয়ামের ৫, ১০, ১৫ বা তার বেশি গুণ। প্রিমিয়াম কত হবে ও কভারেজের অঙ্ক তার কত গুণ হবে, তা নির্ভর করে গ্রাহকের উপরেই।
• এই পলিসিতে মেয়াদ শেষে কত টাকা ফেরত মিলবে, তা নির্ভর করে বাজারের ওঠাপড়ার উপরে। দেখা হয় টাকা লগ্নি করে মুনাফা হয়েছে কি না। হলে তার অঙ্ক কতটা।
• মেয়াদ পূর্তির আগে গ্রাহক মারা গেলে, বিমার অঙ্ক এবং ন্যাভের ভিত্তিতে তহবিলের মূল্যের মধ্যে যেটি বেশি হবে, নমিনি সেই টাকাই ফেরত পাবেন।
টার্ম পলিসি
• এই পলিসিতে শুধু জীবনের ঝুঁকির দিকটিই সুরক্ষিত করা যায়। বাড়তি প্রিমিয়াম না গুনলে, সাধারণত মেয়াদ শেষে প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত পাওয়া যায় না।
• এই কারণে এতে কম প্রিমিয়ামে অন্যান্য পলিসির তুলনায় অনেকটাই বেশি কভারেজ মেলে।
• বিমার অঙ্ক, প্রিমিয়াম ও মেয়াদ গোড়া থেকেই নির্দিষ্ট করা থাকে।
• মেয়াদ শেষের আগে গ্রাহক মারা গেলে, বিমার টাকা পুরোটাই নমিনি পাবেন। কিন্তু গ্রাহক বেঁচে থাকলে কোনও টাকা পাবেন না।
পাঠকের প্রশ্ন ?
প্রঃ পাঁচ বছর ধরে একই সংস্থায় কাজ করছি। প্রতি মাসে ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা রাখি। সেই টাকা তুলতে চাইলে, কী করতে হবে?
নিলাদ্রি সাহা
ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ভিপিএফ) যে টাকা দিচ্ছেন, তা আপনার পিএফ তহবিলেই জমা পড়ছে। তাই ভিপিএফের টাকা তোলার নিয়ম পিএফের মতোই হবে।
প্রঃ আমার পেনশন বা সেভিংস থেকে মেয়েদের কিছু টাকা দিতে চাই। আমি আয়কর রিটার্ন দাখিল করি। আমার ও মেয়েদের, দু’পক্ষের করের ক্ষেত্রে এর কী প্রভাব পড়বে?
সুকোমল কান্তি মজুমদার, নিউ ব্যারাকপুর
আপনার পেনশন অথবা জমানো তহবিল থেকে কোনও টাকা মেয়েদের উপহার বা দান হিসেবে দেওয়া হলে, দাতা এবং গ্রহীতা কাউকেই কোনও কর দিতে হবে না। আয়কর আইনের ৫৬(২) ধারা অনুযায়ী, বিনিময়ে কিছু না পেয়ে ৫০ হাজার টাকার বেশির মূল্যের কোনও কিছু দান করা হলে, তার পুরোটাই প্রাপকের হাতে করযোগ্য হয়। তবে ওই দান যদি ৫৬ ধারায় নির্দিষ্ট কয়েক জন আত্মীয়দের কাউকে করা হয়, তবে তা পুরোটাই থাকে করমুক্ত। আপনার মেয়েরা এই ধারা অনুযায়ী আত্মীয় হিসেবে গণ্য হবেন। দাতা হিসেবে আপনারও কর দেওয়ার কোনও দায় নেই।
পরামর্শদাতা:
অমিতাভ গুহ সরকার
পরামর্শের জন্য লিখুন:
‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।
ই-মেল: bishoy@abp.in
ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না