ভারতে আলোর চাহিদার ক্ষেত্রে সিএফএলের বাজার শেষ। দ্রুত তার জায়গা নিচ্ছে এলইডি। এ কথা মাথায় রেখেই বৈদ্যুতিক পণ্য নির্মাতা হ্যাভেলস ক্রমশ সিএফএল উৎপাদন থেকে নিজেদের সরিয়ে আনছে। তবে দামি পণ্যের পাশাপাশি গ্রামে বাজার বাড়ানোর দিকেও নজর দিচ্ছে সংস্থা। লক্ষ্য চিনা পণ্যকে প্রতিযোগিতায় পিছনে ফেলে উঁচু মানের সামগ্রী তৈরি।
হ্যাভেলসের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনিল রাই গুপ্ত সম্প্রতি রাজস্থানের নিমরানায় তাঁদের কারখানায় এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘বর্তমানে ভারতে এলইডি আলোর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার। আগামী দু’বছরে বৈদ্যুতিক আলোর বাজারের ৪৫ শতাংশই এলইডি-র দখলে চলে যাবে। ইতিমধ্যেই আমাদের মোট বাতি উৎপাদনের ৩৮% এই আলো। দু’বছরের মধ্যে তা ৫০ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছি। কারখানাগুলিতে ক্রমশ সিএফএলের উৎপাদন কমিয়ে বাড়ানো হবে এলইডি আলোর উৎপাদন।’’
বর্তমানে হ্যাভেলস বছরে ৮০০০ কোটি টাকার ব্যবসা করছে। বছরে তা ১৫ শতাংশ বাড়ানোই সংস্থার লক্ষ্য। অনিলবাবু বলেন, ‘‘আগামী তিন বছরে ব্যবসা বাড়াতে ৬০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা করেছি আমরা।’’
সম্প্রতি নতুন একটি এলইডি বাতি এবং বেশি দামের বা প্রিমিয়াম শ্রেণির সিলিং পাখা বাজারে এনেছে হ্যাভেলস। এলইডি আলোটি ‘লুমেনো’ ও সিলিং পাখাটি ‘ইএস-৪০’ নামে ছাড়া হয়েছে। অনিলবাবুর দাবি, এখন দেশের বেশি দামি বৈদ্যুতিক পাখার বাজারের ২৩% হ্যাভেলসের দখলে। তিনি জানান, অতি কম বিদ্যুৎ খরচ হয় এমন পাখা তৈরির জন্য তাঁরা গবেষণা চালাচ্ছেন।
এ দিকে, হ্যাভেলস এত দিন প্রধানত শহর ভিত্তিক ক্রেতার জন্য বেশি দামি বৈদ্যুতিক পণ্যের বাজারের উপরই বেশি জোর দিত। তবে এ বার সংস্থা নিশানা করছে গ্রামের বাজারকে, জানান অনিলবাবু। কারণ তাঁর মতে, গ্রামের মানুষ এখন হাল ফ্যাশনের পণ্য কেনার দিকে ঝুঁকছেন। তাঁদের আর্থিক হালও আগের থেকে অনেক ভাল। গ্রামের জন্য অবশ্য তুলনায় কম দামের পণ্য উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হ্যাভেলস কর্তৃপক্ষ।
বতর্মানে ভারতের বাজার অনেকটাই দখল করে নিয়েছে চিনে তৈরি বৈদ্যুতিক আলো। তার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে হ্যাভেল্স সমস্যায় পড়বে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে অনিলবাবু বলেন, ‘‘প্রথমত, গ্রামের জন্য আমরা বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক পণ্য তৈরি করব, যার দাম চিনা পণ্যের থেকে বেশি হবে না। দ্বিতীয়ত, চিনা পণ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তৃতীয়ত, এখন চিনেও মজুরি বাড়ার ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ফলে বাড়ছে তার পণ্যের দামও।’’