অতি বিত্তবানদের সম্পদ বাড়লেও ভারতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তাঁরা সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন। প্রতীকী ছবি।
কোভিডকালে সাধারণ রোজগেরে মানুষের জীবন-জীবিকা ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও, বিত্তবানেরা আরও সম্পদশালী হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সমীক্ষা। এ বার অন্য এক সমীক্ষায় দাবি, অতি বিত্তবানদের সম্পদ বাড়লেও ভারতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তাঁরা সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন। এমনকি, এই ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক কালে কম অর্থ এসেছে বিদেশে বসবাসকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকেও। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে শিল্প সংস্থাগুলির খরচ বৃদ্ধির ফলে গত অর্থবর্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির তহবিল সংগ্রহের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত কমেনি।
সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে সমীক্ষা রিপোর্টটি তৈরি করেছে পরামর্শদাতা সংস্থা বাইন অ্যান্ড কোম্পানি এবং দাসরা। সেখানেই দাবি, গত অর্থবর্ষে অতি বিত্তশালীদের সম্পদ ৯.২% বেড়েছে। কিন্তু সামাজিক খাতে তাঁদের খরচ এক বছর আগের তুলনায় ৫% কমে হয়েছে ৪২৩০ কোটি টাকা। এই হিসাব কষা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোর কর্ণধার আজ়িম প্রেমজিকে বাদ রেখে। তিনি কার্যত ‘ব্যতিক্রমী’ অঙ্কের অর্থ দান করেছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিদেশে বসবাসকারী ব্যক্তিদের খরচও ৩% কমে হয়েছে ১৫,০০০ কোটি টাকা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সংগ্রহ করা তহবিলে তাঁদের অবদান ১৫% থেকে ১৪ শতাংশে নেমেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে তা ২১% ছিল। তবে এই ক্ষেত্রের মোট তহবিল সংগ্রহ ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রায় কাছাকাছি রয়েছে, আলোচ্য সময়ে (১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা)। মূলত সংস্থাগুলির সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে খরচ বৃদ্ধিই অন্য সব ক্ষেত্র থেকে দানের ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে কর্পোরেট সংস্থাগুলির খরচের ব্যাপারে যে স্পষ্ট আইন রয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন সমীক্ষকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গত ক’বছরে বিদেশিঅর্থসাহায্যের ব্যাপারে সরকারি কড়াকড়ি বেড়েছে। তাতে সমস্যায় পড়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি।
তবে রিপোর্টে দাবি, কয়েক বছরে সামাজিক ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগে দান ১১% করে বেড়ে ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষে ১.৮৬ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে। সামাজিক খাতে সরকারের খরচও বেড়েছে। তবে রাজকোষ ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে তা কতটা বাড়ানো যাবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।