২০১৯-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে সরকারের তরফ থেকে ডিজিটাল পেমেন্টের উপর বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ট্রাভেল কার্ডের ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এই কার্ডের ঘোষণা করে বলেন, “দেশে ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার বাড়াতে সরকারের তরফে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনীতিকে ডিজিটাল-নির্ভর করে তুলবে। এই কার্ড তারই অংশ।”
এটি নরেন্দ্র মোদীর ‘ওয়ান নেশন ওয়ান কার্ড’-এর লক্ষ্যে তৈরি। প্রথম এই কার্ডের ঘোষণা করা হয় মার্চ মাসে। এটি দুই ভাবে কাজ করবে- ডেবিট কার্ড যা এটিএমে ব্যবহার করা যাবে এবং লোকাল ওয়ালেট হিসাবে। অনলাইন পেমেন্টের জন্য যে অ্যাপগুলি আছে, তার যে ওয়ালেট হয়, তাকেই লোকাল ওয়ালেট বলা হয়।
এই কার্ড ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এনপিসিওয়াই)-এর অধীনে ‘রুপে কার্ড’ এর মতোই হবে, যা ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হবে। দেখতে সাধারণ এটিএম বা মেট্রোর স্মার্ট কার্ডের মতোই হবে এই ট্রাভেল কার্ড।
এই কার্ড ব্যবহার করে বাসে, ট্রেনে ও মেট্রোয় যাতায়াত করা যাবে। কিছুটা মেট্রোর স্মার্টকার্ডের মতোই হবে এর ব্যবহার। যাতায়াতের ভাড়া এই কার্ড থেকে দেওয়া যাবে। সেই টাকা কাটা যাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে।
‘কনট্যাক্টলেস পেমেন্ট’ এর জন্যও এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ কোনও রকম মেশিনের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া একবার সোয়াইপ করলেই এই কার্ডের মাধ্যমে টাকার লেনদেন করা যাবে। আলাদা করে কোনও সার্ভার এবং পিন নম্বরের প্রয়োজন পড়বে না।
সমস্ত নতুন মেট্রো এবং অন্যান্য ট্রানজিট পেমেন্ট ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড (এনসিএমসি)-এর মাধ্যমে এই ট্রাভেল কার্ড দ্বারা পরিচালিত হবে। অর্থাৎ এই কার্ডটি মেট্রো ও অন্যান্য ট্রানজিট পেমেন্ট দ্বারা সমর্থিত হবে।
এই ট্রাভেল কার্ড টোল ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে। স্বল্প মূল্যের ব্যবসায়ীক লেনদেন করতেও সাহায্য করবে। এতদিন ব্যবসায়ীদের অনলাইন মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করা হত। এখন সেই লেনদেন ট্রাভেল কার্ডের মাধ্যমেও করা যাবে।
এই কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের সংযোগ থাকবে, ফলে টাকা ফেরতের কোনও রকম ঘটনা ঘটলে সেই টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে।
‘রুপে’ ভিত্তিক এই কনট্যাক্ট লেস কার্ড স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মতো মোট ২৫টি ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে। ডিজিটাল ব্যাঙ্কের মধ্যে পেটিএম থেকেও এই ট্রাভেল কার্ড পাওয়া যাবে।
এই উদ্যোগটি স্বতন্ত্রভাবে স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহের ব্যবস্থা ‘স্বাগত’ এবং ওপেন লুপ স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা ‘স্বীকার’ দ্বারা সমর্থিত।
অনলাইন পেমেন্টে যেমন ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়, এই কার্ডেও বিদেশে এটিএম ব্যবহারে ৫ শতাংশ এবং মার্চেন্ট আউটলেটে ব্যবহারে ১০ শতাংশ ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে।
২০১৯-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে সরকারের তরফ থেকে ডিজিটাল পেমেন্টের উপর বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ট্রাভেল কার্ডের ঘোষণা করা হয়েছে।