—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের পাট শিল্পের হাল ফেরাতে কী ধরনের পদক্ষেপ জরুরি, তা খতিয়ে দেখতে শিবপুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনয়ারিং সায়েনন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-এর (আইআইইএসটি) সঙ্গে হাত মিলিয়ে গবেষণা করছে আমেরিকার দুই বিশ্ববিদ্যালয়। এরা হল ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটি এবং মর্গ্যান স্টেট ইউনিভার্সিটি। এক বছর গবেষণা করে রাজ্য, কেন্দ্র এবং চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র কাছে রিপোর্ট দেবেন গবেষকরা। রাজ্যের অর্থনীতির ক্ষেত্রে পাট শিল্পের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রেক্ষিতে বিশ্বমানের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
এই গবেষণা চালানোর ক্ষেত্রে সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন আইআইইএসটি-র অধ্যাপক শৌভনিক রায়। এ ছাড়া বাকি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যেরা হলেন অধ্যাপক ব্রেন্ট রায়ান এবং অধ্যাপক সিদ্ধার্থ সেন। শৌভনিকবাবু জানান, এর খরচ বহন করছে এমআইটি।
গত কয়েক বছরে করোনা, আবহাওয়ার সমস্যার মতো নানা কারণে ধাক্কা খেয়েছে দেশের পাট শিল্প। যার অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত। বেশিরভাগ চটকলও এখানে। কাঁচাপাটের দাম বৃদ্ধি-সহ নানা কারণে তারা বহু ক্ষেত্রে সময়ে বরাত অনুসারে চটের বস্তা সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের পাট শিল্পের যে বিষয়গুলিকে গবেষণার অঙ্গ করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উৎপাদনের আধুনিকীকরণ, চটকলগুলির পরিকাঠামোর পরিবর্তন, তাদের উৎপাদনশীলতা এবং মিল সংলগ্ন জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার। গবেষক দলের সদস্যেরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৭টি চটকল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান আইজেএম-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া।
শৌভনিকবাবু বলেন, “বহু মিলে প্রচুর অতিরিক্ত জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেগুলিকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তার উপায় বার করা গবেষণার অন্যতম উদ্দেশ্য। ক্রমশ শহরের উপরে মানুষের চাপ বাড়ছে। তাই শহরায়নের জন্যও জমির প্রয়োজন। কিন্ত সমস্যা হল চটকলগুলির প্রায় সমস্ত জমিই সরকারের থেকে লিজে নেওয়া। তাই সেই জমিকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতে হলে রাজ্যের সায় জরুরি। সেটা কী ভাবে করা যায় তা খতিয়ে দেখব। চটকলগুলির আর্থিক উন্নতি হলে তার সুফল কর্মীরাও পাবেন।’’ আর সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, রাজ্য যদি ঠিক মতো গবেষণা থেকে উঠে আসা সুপারিশ কার্যকর করে, তা হলে সেটা আখেরে এই শিল্পের উন্নতিই করবে।