বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রাত পোহালেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা বন্দর নগরীতে। তার আগে অশনি সঙ্কেত হলদিয়া বন্দরে। পাওনা-গন্ডা নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষে কার্যত অচল হয়েছিল মাল খালাস প্রক্রিয়া। তবে বুধবার রাতে বৈঠকে সমস্যা আপাতত মিটেছে। কর্মবিরতি তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঠিকা শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে ঠিকা শ্রমিকদের বড় অংশ কর্মবিরতি শুরু করেন। তার জেরে মঙ্গলবার হলদিয়া বন্দরে ৪টি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়েছিল। বুধবার সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৭। হলদিয়া বন্দরে ১৭টি বার্থ। বাকি ১০টি বার্থে অবশ্য মাল ওঠানো-নামানোর কাজ হয়েছে। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (ট্রাফিক) অভয় মহাপাত্র বলেন, ‘‘১০টি বার্থে কাজ হয়েছে। ৭টি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়েছিল। যে সব সংস্থা পণ্য পরিবহণ করে, তাদের শো-কজ় করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে।’’
শুভেন্দু প্রায়ই দাবি করেন, সাংসদ হিসেবে তিনি সরে যাওয়ার পরে নতুন কোনও লগ্নি আসেনি হলদিয়ায়। তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজির কারণেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চল ধুঁকছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। ফলে তাঁর সভার আগে বন্দরের এমন পরিস্থিতি হওয়ায় শুভেন্দু আরও সুর চড়াবেন ও বিজেপি শিবির চাঙ্গা হবে বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
তৃণমূলের তরফে অবশ্য বন্দরের জট কাটানোর চেষ্টা হয়েছে এ দিন। সকালে বন্দরের ভিতরে শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইএনটিটিইউসি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন দে ও হলদিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি মিলন মণ্ডল। তবে সুরাহা হয়নি। বরং শ্রমিকদের একাংশের ক্ষোভ, এতদিন যখন তাঁদের কম বেতন দেওয়া হচ্ছিল, তখন নেতারা কোথায় ছিলেন! ফলে, এ দিন তৃণমূলের দুই নেতাকে তাঁরা জানিয়ে দেন, নিজেদের লড়াই নিজেরাই লড়বেন। বুধবার বিকেলে বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার সাথেও বৈঠক করেন তৃণমূলের নেতৃত্ব। তারপর রাত পর্যন্ত বেসরকারি সংস্থা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দাবি শ্রমিকদের একাংশের।
৭ দিনের মধ্যে বেতন সংক্রান্ত সমস্যা মেটনো হবে, মালিকপক্ষের এমন লিখিত আশ্বাসেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এক শ্রমিক বলেন, ‘‘৭ দিনের মধ্যে বেতন সমস্যা না মিটলে ফের কর্মবিরতি করা হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মালিকপক্ষকে।’’