ফাইল চিত্র।
শেয়ার বাজার মহল দু’ভাগে ভাগ হল বৃহস্পতিবার। এক দল হাঁফ ছেড়ে বলছে, বুধবার ভাগ্যিস সেনসেক্স ২১৪ পয়েন্ট মতো নেমে গিয়েছিল লগ্নিকারীদের শেয়ার বেচে মুনাফা পকেটে পোরার হিড়িকে। না-হলে ৫৭ হাজার ছাড়ানোর দু’দিনের মাথায় তা ৫৮ হাজারের মাইলফলকও পেরিয়ে যেত। ঠিক যে গতিতে ৫৬ হাজার থেকে ৫৭ হাজার হয়েছে। বাজারের এত দ্রুত চড়া পছন্দ নয় তাদের। অন্য অংশের অবশ্য আফসোস সেটা না-হওয়ায়। তবে এ দিনও উচ্চতার নতুন নজির গড়ে সেনসেক্স পৌঁছে গিয়েছে ৫৮ হাজারের ঘাড়ের কাছে। ৫১৪.৩৩ পয়েন্ট উঠে এই প্রথম থিতু হয়েছে ৫৭,৮৫২.৫৪ অঙ্কে। ১৭,২৩৪.১৫-এ উঠে রেকর্ড করেছে নিফ্টি-ও। উত্থান ১৫৭.৯০।
জিয়োজিৎ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর গবেষণা বিভাগের প্রধান বিনোদ নায়ারের দাবি, ইতিবাচক আর্থিক পরিসংখ্যান এবং বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির শেয়ার কেনার জেরে আমেরিকার কর্মসংস্থানের হিসেব প্রকাশের আগে সতর্ক বিশ্ব বাজারের মধ্যে দাঁড়িয়েও এ দিন ভারতের বাজার উঠেছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, অর্থনীতির বাস্তব ছবির সঙ্গে এই লাগামহীন উত্থানের কোনও যোগ নেই। জিডিপি থেকে পরিকাঠামো বৃদ্ধির পরিসংখ্যান— সবই আগের বছর তলিয়ে যাওয়া হিসেবের সঙ্গে তুলনায় বড় দেখাচ্ছে এ বার। ফলে এপ্রিল-জুনে ২০.১% আর্থিক বৃদ্ধি বা জুলাইয়ে আটটি মূল পরিকাঠামো ক্ষেত্রের ৯.৪% উৎপাদন বৃদ্ধি দেখে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলার সময় আসেনি। যদিও কেন্দ্রের দাবি, এটাই ইংরেজি ‘V’ বর্ণের মতো উন্নতির লক্ষণ। শেয়ার বাজার অবশ্য লাফিয়ে লাফিয়ে এগোচ্ছে তর্ক-বিতর্কের তোয়াক্কা না-করেই, স্রেফ ভবিষ্যতে আর্থিক হাল চাঙ্গা হওয়ার আশায়।
এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ জয়ন্ত আর বর্মার দাবি, ‘‘শেয়ার বাজার সব সময়ই আগামীতে চোখ রাখে এবং বৃদ্ধির বর্তমান অবস্থার তুলনায় তার অনেক বেশি আগ্রহ ভবিষ্যতে তার এগোনোর সম্ভাবনা নিয়ে।’’ সেই দিক থেকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির কমিটির সদস্য বর্মাও মনে করছেন, ভারতের অর্থনীতি যে ভাবে চাঙ্গা হচ্ছে, তাতে দ্রুত বেশির ভাগ শিল্পই করোনা-পূর্ব অবস্থায় পৌঁছে যাবে। তাতে জ্বালানি জোগাবে আর্থিক ক্ষেত্রের স্বাস্থ্যে হওয়া উন্নতিও। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন করোনার আগে দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনীতির ঝিমিয়ে থাকার কথা।