মুহাম্মদ ইউনূস।
ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ খুলে দিতে পারে পরিযায়ী শ্রমিকের পায়ে হেঁটে হাজার কিলোমিটার পাড়ির অসহায় ছবি। গ্রাহকের থেকে ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার প্রথম শর্ত যে বিপদের দিনে সুদ-আসল ভুলে আগে তাঁর পাশে দাঁড়ানো, তা-ও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে করোনা। তাই এই অতিমারি শেষে ক্ষুদ্রঋণ শিল্পের ছবি আমূল বদলাতে পারে বলে আশাবাদী গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলির সংগঠন সা-ধনের ওয়েবিনারে শনিবার ইউনূস বলেন, “বাড়ি ফিরতে মরিয়া পরিযায়ী শ্রমিকের ঢল প্রশ্ন তোলে, শুধু কাজ খুঁজতে তাঁদের বাড়ি ছাড়তে হল কেন? কেনই বা কোনওক্রমে ভিন্ রাজ্য বা শহরে মাথা গুঁজে নিজের ও পরিবারের পেট চালাতে হবে? বিনা বন্ধকে, সহজ শর্তে অল্প টাকা ধার পেলেও নিজের গ্রামে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে জীবন ধারণের চেষ্টা তাঁদের অনেকে করতে পারতেন না কি?” তাঁর মতে, হঠাৎ কাজ, মাথার ছাদ ও সম্মান খুইয়ে যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শ্রমিকদের হয়েছে, অনেকেই তার পুনরাবৃত্তি চাইবেন না। তাই আগামী দিনে এই সমস্ত মানুষ ক্ষুদ্রঋণের পাখির চোখ হতে পারেন।
ইউনূসের দাবি, আশির দশকে বাংলাদেশের বন্যায় সর্বস্ব হারান অধিকাংশ দরিদ্র। তখন বকেয়া ধার সময়ে দিতে পারেননি অনেকেই। কিন্তু টাকা না-চেয়ে পাশে দাঁড়ানোয়, নতুন করে ঘর বাঁধার পরে সুদ-সহ বকেয়া ফেরান তাঁরা। তাঁর মতে, করোনার এই কঠিন সময়েও তাই হিসেব না-কষে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। এই অতিমারি ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসার বৃত্ত আরও অনেক ছড়িয়ে দেবে বলে আশাবাদী বন্ধন ব্যাঙ্ক কর্ণধার চন্দ্রশেখর ঘোষও।