প্রতীকী ছবি
অর্থনীতির হাল ফেরার লক্ষণ নেই। অথচ পরিস্থিতির বিপরীতে গিয়ে কিছু দিন হল শেয়ার বাজার উঠেই চলেছে। গত সপ্তাহে সেনসেক্স বেড়েছে ১৮৬৩ পয়েন্ট। তার আগের তিন দিনে ১৮১৫। অর্থাৎ, আট দিনে মোট ৩৬৭৮ অঙ্ক (১২%)। শুক্রবার তা বন্ধ হয় ৩৪,২৮৭ পয়েন্টে। করোনার আঘাতে বাজার যেখানে তলিয়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে সূচকটি উঠেছে কমবেশি ৯০০০ পয়েন্ট। তবে আশঙ্কা, এই উত্থান রুখে দিতে পারে বিভিন্ন সংস্থার এপ্রিল-মে-জুনের আর্থিক ফলাফল। কারণ, লকডাউনের জেরে দীর্ঘ সময় যেহেতু ব্যবসা থমকে ছিল, তাই সংস্থাগুলির হিসেবের খাতায়ও তার ছাপ পড়তে বাধ্য। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফল বেরোনো শুরু হবে।
আসলে মার্কিন বাজারের টানা উত্থানের প্রভাব পড়েছে এ দেশেও। তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে আমেরিকায় ২৫ লক্ষ মানুষ কাজ ফিরে পেয়েছেন। এই তথ্যে তেতে উঠেছে সে দেশের শেয়ার সূচক। ইঙ্গিত দিচ্ছে, অনেকটাই সচল হয়েছে তাদের অর্থনীতি। ন্যাসডাক সূচক তার সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এখন ১ শতাংশেরও কম পিছনে। মার্কিন বাজারের প্রভাবে মাথা তুলেছে অন্য কিছু দেশের বাজারও।
আরও পড়ুন: বন্দরের ছন্দে ফিরতে আরও প্রায় তিন মাস
তা ছাড়া, ভারতে সূচককে শক্তি জুগিয়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের শেয়ার দর ১৬০০ টাকা ছুঁয়ে ফেলা। লকডাউনের বাজারেও বড় সাফল্য পেয়েছে সংস্থার ৫৩,০০০ কোটি টাকার রাইটস ইসু। আকারে এত বড় হওয়া সত্ত্বেও এর জন্য আবেদন এসেছে প্রায় ১.৬ গুণ। পাশাপাশি, বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার কাছে জিয়োর প্ল্যাটফর্মের অংশীদারি েবচে বড় অঙ্কের টাকা ঘরে তুলেছে তারা। অনুমান, বছর শেষের আগেই সম্পূর্ণ দেনামুক্ত হবে রিলায়্যান্স। এতেই বেড়েছে সংস্থার শেয়ার দর। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ভারতীয় অর্থনীতি সামগ্রিক ভাবে শক্তি ফিরে পেয়েছে। জুন ত্রৈমাসিকে সংস্থাগুলির ফলাফল যে বেশ খারাপ হবে, সেটা প্রত্যাশিত। তখন বাজারে তার প্রভাব পড়বেই।
গত সপ্তাহে আর্থিক ক্ষেত্রের অন্যান্য খবরের দিকে এ বার একটু চোখ রাখা যাক। এর মধ্যে আছে, গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে স্টেট ব্যাঙ্কের মুনাফার চার গুণেরও বেশি বৃদ্ধি। ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ় ২৬.৫৩%। এলঅ্যান্ডটি, এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের লাভ কমে যাওয়া। ইন্ডিগোর ৮৭১ কোটি টাকা লোকসান গোনা।
আরও পড়ুন: কর ছাঁটার ফল মিলতে দেরি হবে, মানল কেন্দ্র
করোনার কারণে বিভিন্ন রিটার্ন জমার সময় বাড়িয়েছিল আয়কর দফতর। বেড়েছিল গত অর্থবর্ষের আয়কর ছাড়ের সুবিধাযুক্ত লগ্নির সময়ও। তার মধ্যে কয়েকটি ক্ষেত্রের সময় কিন্তু এ মাসেই শেষ হচ্ছে। তাই এই দিকটা আরও এক বার ঝালিয়ে নেওয়া জরুরি। সঙ্গের সারণিতে এই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হল।
(মতামত ব্যক্তিগত)