চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে ফ্ল্যাট-বাড়ি মহার্ঘ হওয়া এবং তা মোকাবিলায় সুদ বৃদ্ধির কারণে ঋণে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। প্রতীকী ছবি।
অতিমারি নিজস্ব আস্তানার প্রয়োজন যেমন বেশি করে বুঝিয়েছিল, তেমনই করোনাকালে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের বড় অংশের আয়ে কোপ পড়ায় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় মাথার উপরে নিজস্ব ছাদ জোগাড়। চিন্তা আরও বাড়ায় চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে ফ্ল্যাট-বাড়ি মহার্ঘ হওয়া এবং তা মোকাবিলায় সুদ বৃদ্ধির কারণে ঋণে খরচ বেড়ে যাওয়া। সেই আশঙ্কা বহাল রইল বুধবারও, যখন টানা ছ’বার সুদ বাড়াল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। আবাসন শিল্পের সংগঠন থেকে শুরু করে উপদেষ্ট মহল— সকলেরই ধারণা এতে ঋণের খরচ আরও বাড়ায় চাপে পড়বেন ক্রেতা। বিশেষত ধাক্কা খাবে কম দামি ফ্ল্যাটের বিক্রি। মূলত গৃহঋণের ভরসাতেই যেগুলি কেনেন সাধারণ রোজগেরে মানুষ।
এ দিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়ানোর পরে গত মে থেকে টানা ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ল এই হার। স্বভাবতই সেই সূত্রে মাথা তুলেছে গৃহঋণের সুদও। এই পরিস্থিতিতে ক্রেতার চাপ কমাতে বাজেটে সুরাহা চেয়েছিল আবাসন শিল্পের সংগঠন ক্রেডাই। কিন্তু তা না-মেলায় হতাশা প্রকাশ করেছিল তারা। এখন ফের সুদ বাড়লে সাধারণ ক্রেতার ফ্ল্যাট কেনায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ক্রেডাইয়ের সর্বভারতীয় প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন পাতোদিয়া, ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা, ক্রেডাইয়ের সদস্য রাহুল টোডি প্রমুখ।
তাঁদের মতো নির্মাণ শিল্পের আর এক সংগঠন নারেডকো-র ভাইস চেয়ারম্যান নিরঞ্জন হীরানন্দানিরও বক্তব্য, বিশেষত কম দামি ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রেই বেশি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে চাহিদা থাকলেও অনেকে সেই পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে পারেন বলে ধারণা শিল্পের একাংশের। সুশীল এবং উপদেষ্টা সংস্থা অ্যানারকের চেয়ারম্যান অনুজ পুরী আবার মনে করাচ্ছেন, গত দু’তিনটি ত্রৈমাসিকে ফ্ল্যাটের দামও বেড়েছে। এ দিনের পরে গৃহঋণের সুদ ৯.৫% ছাড়াতে পারে বলে মত অনুজের। ফলে সব মিলিয়ে খরচ আরও বাড়বে।
বস্তুত, গত বছরের শেষের দিকে আবাসনের চাহিদায় এমনিতেই ভাটা দেখা গিয়েছে। অবশ্য রাজ্যে স্ট্যাম্প ডিউটি ও সার্কল রেট-এর ছাড়ের সময় বাড়ায় কিছুটা রেহাই মিলবে এবং তা সদর্থক প্রভাব ফেলবে বলে আশায় অনেকেই। তবে কম দামিতে ধাক্কা এলেও, দামি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের চাহিদায় প্রভাব পড়বে না বলেওআশা একাংশের।