ছবি: পিটিআই।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে অর্থসঙ্কটে পড়া রাজ্যগুলিকে বাড়তি ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েও তার সঙ্গে শর্ত চাপিয়েছিল মোদী সরকার। শর্ত ছিল, কেন্দ্রের চারটি কর্মসূচি রাজ্যকে মেনে নিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য নিঃশর্তে বাড়তি ঋণের অনুমতি চাইলেও কেন্দ্র তাতে অনড় ছিল। ফলে অনেক রাজ্যই কিছু শর্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়। মঙ্গলবার তাকেই করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্যের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই হিসেবে দেখাতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী একেই ‘প্রত্যয় ও উৎসাহের মাধ্যমে সংস্কার’ হিসেবে তুলে ধরলেন। এক ব্লগে তাঁর যুক্তি, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাড়তি মোট ১.০৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিতে পেরেছে রাজ্যগুলি। কেন্দ্র ও রাজ্যের বোঝাপড়ার পাশাপাশি, সংস্কারের পথে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র যে উৎসাহ দিয়েছে তার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
জিএসটি-র বকেয়া, করোনা প্রতিষেধক এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন পণ্যের করের হার নিয়ে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি এখন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব। সেই আক্রমণের মুখে আজ প্রধানমন্ত্রী বারবার কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতির কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্র আসলে রাজ্যগুলিকে অসুবিধার মধ্যে পেয়ে নিজেদের কর্মসূচি মেনে নিতে বাধ্য করেছে। এমনকি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই কর্মসূচি মানতে না-পারায় অনেক রাজ্য প্রয়োজন থাকলেও বাড়তি ঋণ নিতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গেরই যেমন এই সব কর্মসূচি নিয়ে আপত্তি রয়েছে। কিন্তু সেই সব শর্তকেই সংস্কার হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস নেতাদের কটাক্ষ, মনমোহন সিংহের আর্থিক সংস্কারের ৩০-তম বর্ষপূর্তি চলছে। সেই জন্যই মোদী এখন নিজের সংস্কার তুলে ধরতে চাইছেন।
করোনার প্রথম ঢেউ সামাল দিতে গত বছরের মে মাসে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। সেখানে জানানো হয়েছিল, রাজ্যগুলি তাদের জিডিপি-র অতিরিক্ত ২% ধার করতে পারবে। কিন্তু এর মধ্যে ১% বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ‘সংস্কার’-এর চারটি শর্তে। এক দেশ এক রেশন কার্ড, সহজে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি, পুরসভাগুলির আয় বৃদ্ধি, বিনামূল্যের বিদ্যুতের বদলে সরাসরি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি— এর এক একটি পূরণ করলে ০.২৫% করে অতিরিক্ত ঋণ পাওয়ার সুযোগ খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের এইসব শর্তে আপত্তি রয়েছে।