—প্রতীকী ছবি।
পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার সামান্য। কিন্তু তার পরেও চিন্তা বাড়াল সেই খাদ্যপণ্যের দাম।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধি মাত্র ০.২০%। কিন্তু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৭% ছুঁইছুঁই হারে (৬.৯৫%)। জানুয়ারির ৬.৮৫ শতাংশের তুলনায় অল্প হলেও বেশি। আনাজের মূল্যবৃদ্ধি ১৯.৭৮%, ডালের ১৮.৪৮%। গত মাসে খুচরো বাজারেও খাদ্যপণ্যের দামকে সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি (৮.৬৬%) হারে বাড়তে দেখা গিয়েছে। তার আগের মাসে ছিল ৮.৩%।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, পাইকারি দামের প্রভাব সরাসরি ক্রেতার উপরে পড়ে না। খুচরো বাজারের দামে এর ছাপ পড়তেও বেশ কিছুটা সময় লাগে। তবু তার দ্রুত কমা দরকার। কারণ ৭ শতাংশের কাছাকাছি মূল্যবৃদ্ধি বেশ চড়া। তাঁদের দাবি, সাধারণ ভাবে শীতের মরসুমের খাদ্যপণ্যের দাম অনেকটা কমে আসে। কিন্তু এ বার খুচরো বা পাইকারি, কোথাওই তা দেখা যায়নি। তাই গরম পড়তে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছেই।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এমনিতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য খুচরো বাজারের দামকেই গুরুত্ব দেয়। তবে খাদ্যপণ্য যেহেতু সার্বিক ভাবে সমস্যা তৈরি করছে, তাই সেগুলির পাইকারি দরও একই রকম মাথাব্যথা।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলছেন, পাইকারি মূল্যসূচকের হিসাবে খাদ্যপণ্যের ভাগ কম। তাই তার মূল্যবৃদ্ধি এই বাজারে চড়া হলেও সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হিসাবে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। কিন্তু এখানে খাদ্যপণ্যের দামের ছবিটা যদি এতখানি আশঙ্কাজনক হয়, তা হলে খুচরো বাজারে তা ক্রেতার পক্ষে কতটা বেদনাদায়ক সহজেই অনুমেয়। এই ছবিটা না বদলালে আমজনতার জীবন আরও দুর্বিষহ হবে। তাঁর মতে, ‘‘খাবারের দাম বাড়লে বিশেষ করে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-সহ সাধারণ গরিব মানুষেরা চাপে পড়েন। কারণ, তাঁদের আয়ের বড় অংশ খাওয়া খরচে চলে যায়। কমে প্রকৃত আয়। ফলে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো বিষয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অর্থনীতিতেও চাহিদা কমে।’’ আইআইটি খড়্গপুরের অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, ‘‘চলতি অর্থবর্ষে বৃষ্টির অনিশ্চয়তা রবি শস্যের ফলনে ধাক্কা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে দাম আরও চড়ার আশঙ্কা থাকছে। আগামী অর্থবর্ষে বর্ষা স্বাভাবিক না হলে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা বাড়বে।’’