—প্রতীকী চিত্র।
ডলারের সাপেক্ষে আরও তলিয়ে গেল টাকা। সোমবার এক ডলারের দাম বাড়ল ১৬ পয়সা এবং এই প্রথম তা পৌঁছল ৮৩.৩২ টাকায়। ভারতীয় মুদ্রা এর আগে এতটা নীচে নামেনি। ১১ দিন একটানা ওঠার পরে এ দিন শেয়ার বাজারও কিছুটা পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম ব্যারেলে ফের ছুটছে ৯৬ ডলারের দিকে। সেই সঙ্গে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতে লাগাতার শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছে। এই সব কিছুর ফলে বেড়েছে ডলারের চাহিদা। যা টাকার দামকে টেনে নীচে নামাচ্ছে। তার উপর চড়া সুদ এবং মূল্যবৃদ্ধিতে নড়বড়ে বিশ্ব বাজারে সুরক্ষার অন্যতম কবচ হিসাবে গণ্য হওয়া আমেরিকার মুদ্রা আরও শক্তিশালী হয়েছে। ফলে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে ভারতীয় মুদ্রা। তাঁরা মনে করছেন, টাকার পতন ঠেকাতে অবিলম্বে সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপ জরুরি।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের বক্তব্য, ‘‘বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি চলতি মাসে এ পর্যন্ত ১০,৬০০ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে। বাজার থেকে তোলা টাকাকে বদলে নিতে ডলারের প্রয়োজন হচ্ছে বেশি।’’ তাঁর বার্তা, আমেরিকার সুদ ঘোষণা সামনেই। ফলে দেশি-বিদেশি বাজার আপাতত এ রকম অনিশ্চিতই থাকবে। টাকাকে বাঁচাতে অবিলম্বে আরও ডলার বাজারে ছাড়তে হবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে।
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের দাবি, ‘‘আমেরিকায় ঋণপত্রের ইল্ড বৃদ্ধি, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির মতো কারণ তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে আশঙ্কা, ভারতে মূল্যবৃদ্ধি যে জায়গায় রয়েছে, তাতে সুদ ফের বাড়াতে হতে পারে। সুদ বাড়লে লগ্নি থেকে প্রকৃত আয় আরও কমবে। এর ফলে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির ভারতের বাজার ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। আমার মনে হয় সব থেকে আগে মূল্যবৃদ্ধি কমাতে কেন্দ্র ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের জোরালো পদক্ষেপ দরকার।’’
এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ়-এর গবেষণাকারী বিশ্লেষক দিলীপ পারমার-ও বলছেন, বিভিন্ন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক থাকায় এই সপ্তাহে অত্যন্ত অস্থির থাকতে পারে টাকার দাম। অদূর ভবিষ্যতে ডলার উঠতে পারে ৮৩.৫০-৮৩.৭০ টাকায়।