—প্রতীকী চিত্র।
পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে সোনার দামের গতি। শনিবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট পাকা সোনার দাম পার করল ৬০ হাজারের সীমা। এক ধাক্কায় বেড়ে গেল ১৫৫০ টাকা। দরের দৌড়ে সঙ্গী রুপোও। এক সপ্তাহের মধ্যে ধাতুটির প্রতি কেজি বাটের দাম বেড়েছে
৪৩০০ টাকা!
গত ১৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনা পৌঁছেছিল ৬০,০০০ টাকায়। তার পর থেকে পড়ছিল সেই দর। প্রায় ৩০৫০ টাকা কমার পর যুদ্ধের জেরে ফের তা চড়তে শুরু করেছে। তার আগে দাম যা কমেছিল, গত এক সপ্তাহেই সেই ফারাক মুছে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ৬০ হাজারের চৌকাঠ ছোঁওয়ার এক মাস পূর্ণ হওয়ার কয়েক দিন আগেই ফের সেই সীমা পেরিয়ে গেল হলুদ ধাতুটির দর। শনিবার শহরে পাকা সোনার দাম ছিল ৬০,২০০ টাকা (জিএসটি বাদে)। শুক্রবারে যা বিকিয়েছে ৫৮,৬৫০ টাকায়। গত দু’দিনেই দাম বেড়েছে ১৭০০ টাকা। এ দিন প্রতি কেজি রুপোর বাটের দর ছিল
৭১,৬০০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, অনিশ্চয়তার জন্যই বিশ্ব বাজারে সোনার দাম বাড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে ভারতে। বিশ্ব বাজারে মাত্র দু’দিনে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৫৩ ডলার। এ দিন বিকেলের দিকে তা ১৯৩৩ ডলার ছিল। রুপোর দামও এক সপ্তাহে প্রায় ৪% বেড়ে প্রতি আউন্স ২২.৬৭ ডলারে পৌঁছেছে।
পাকা সোনার ব্যবসায়ী জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ অজমেঢ়া এ দিন বলেন, ‘‘যুদ্ধের মতো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে সোনা ও রুপো দামি হওয়াটাই রেওয়াজ। পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ছে। তাই লগ্নিকারীরা ওই দুই ধাতুকে বিনিয়োগের নিরাপদ ক্ষেত্র হিসাবে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন। বিশেষ করে সোনাকে। শেয়ার বাজার-সহ অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে অনেকেই পুঁজি সরিয়ে হলুদ ধাতু ঢালছেন। অনিশ্চিত বাজারে আমেরিকার মুদ্রায়ও (ডলার) লগ্নি বাড়ে। এ বারও সেই সূত্রে দামি
হচ্ছে ডলারও।’’
তবে গয়নার বাজারে আশঙ্কা থাকলেও এখনও বড়সড় ধাক্কা লাগেনি, দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্পের। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে বলেন, ‘‘যুদ্ধ কবে থামবে তার নিশ্চয়তা নেই। বরং ঝাঁঝ বাড়ছে। তাই দাম যদি আরও চড়ে, এই আশঙ্কায় বিয়ে-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে জরুরি গয়না কেনার কাজ সেরে ফেলছেন অনেকেই।’’ একই বক্তব্য হলদিয়ার গয়না ব্যবসায়ী মধুসূদন কুইল্যার।
এই দোলাচলকে সঙ্গী করেই আপাতত চলছে বাজার।