শিয়ালদহ স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
ভোটের মুখে রাজ্যে রেলের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসার প্রসার এবং কর্মসংস্থানের বার্তা দিতে ‘এক স্টেশন এক পণ্য’ প্রকল্পের প্রচারে কোমর বেঁধে নামল মোদী সরকার। আজ অনলাইনে দেশ জুড়ে ৮৫,০০০ কোটি টাকার নানাবিধ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, সেখানে সরকারি সাফল্য প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে এই প্রকল্পটিতে। যার আওতায় সারা দেশের বিভিন্ন স্টেশনে তৈরি হওয়া ১০৮৯টি ‘এক স্টেশন এক পণ্যের’ দোকান বা স্টলের মধ্যে শুধু এ রাজ্যেই রয়েছে ৩৫০টি।
রাজ্যে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির একাংশের অভিযোগ, রেলের ওই স্টলগুলি ভোটের মুখে প্রচারের আলোয়। প্রধানমন্ত্রীর ছবিও থাকছে সেখানে। সেগুলিকে সামনে রেখে বলা হচ্ছে, স্থানীয় শিল্পের প্রসার এবং কর্মসংস্থানের কথা। কিন্তু হঠাৎ এখনই কেন এই তৎপরতা? উদ্দেশ্য যে ভোটের হাওয়া নিজেদের দিকে টানা, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজ্যের মানুষের সঙ্গে দ্বিচারিতা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা।
যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘এক স্টেশন এক পণ্য’ প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হল প্রতিটি স্টেশনে একটি করে দোকান খুলে সেখানে স্থানীয় হস্তশিল্পীদের ভাল কাজগুলিকে বিক্রির জন্য তুলে ধরা। বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষ কিছু পণ্যও রাখা হবে। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ দেউষ্কর-এর দাবি, এতে এলাকার প্রচার হবে, স্থানীয় শিল্পের প্রসার ঘটবে এবং কিছু মানুষ কাজ পাবেন। স্থানীয় অর্থনীতির প্রসার ঘটানোই ওই পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, পূর্ব রেলের আওতায় ৩০১টি, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ২৩টি এবং উত্তরবঙ্গে উত্তর সীমান্ত রেলের একাধিক স্টেশনে ওই দোকান তৈরি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে দোকানের সংখ্যা ১০৩টি, শিয়ালদহ ডিভিশনে ১৪৩টি, আসানসোল ডিভিশনে ২৭টি এবং মালদহে ২৮টি। মূলত স্থানীয় শিল্পীদের হাতের কাজ, বিভিন্ন শস্যের বীজ এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাত উদ্ভিজ্জ পণ্য বিক্রি হবে। রেলের দাবি, কৃষ্ণনগর, মালদহ, শান্তিপুর, শান্তিনিকেতন-সহ কিছু স্টেশনে ভাল সাড়া মিলছে।
রেল জানিয়েছে, স্থানীয় শিল্পীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে এক মাসের জন্য দোকান ভাড়া নেওয়ার আবেদন করতে পারেন। দিতে হবে ২০০০ টাকা। স্টল তৈরি এবং তা ভাড়া নিতে অগ্রিম লাগছে না। মিলিন্দ জানান, স্থানীয় বাজারে খ্যাতি আছে এমন হস্তশিল্প এবং কৃষি পণ্য বিক্রিতে উৎসাহ দিতেই এক স্টেশন এক পণ্যের দোকান তৈরি হয়েছে। প্রতিটিতে মাসে ৪০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিখরচায় দেবে রেল। সূত্রের খবর, এক একটি স্টল বা দোকান গড়তে রেলের এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পূর্ব রেল প্রধানমন্ত্রী জনৌষধি প্রকল্পের অধীনে ৫০টি স্টেশনে জেনেরিক ওষুধের দোকানও তৈরি করবে। এ দিকে, আজ দেশের বিভিন্ন রুটে আরও ১০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি-পটনা।