—প্রতীকী চিত্র।
গত অর্থবর্ষে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধির হার প্রত্যাশা ছাপালেও, শেয়ার বাজারে তেমন উদ্দীপনা দেখা যায়নি। ফলে নজির গড়তে পারেনি সেনসেক্স ও নিফ্টি। মনে করা হচ্ছে, অল্প সময়ে বেশি উত্থানের ফলে বিক্রির চাপ চলে আসাতেই ভাল খবরেও তেড়েফুঁড়ে উঠতে পারেনি তারা। একাংশের আবার দাবি, নিচু ভিতের উপর পা থাকায় বৃদ্ধি এমন উঁচু দেখাচ্ছে। বরং গত অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে (অক্টোবর থেকে) চড়া মূল্যবৃদ্ধি, সুদ বৃদ্ধি, ঢিমে চাহিদা, লগ্নির খরা অর্থনীতিকে বিপাকে ফেলছিল। বাজার এটা অনুভব করেছে বলেই উচ্ছ্বাসে লাফ দেয়নি। সেনসেক্স সপ্তাহ শেষ করেছে ৬২,৫৪৭ পয়েন্টে। সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এখনও ৭৩৭ পয়েন্ট পিছনে।
গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) অর্থনীতি এগিয়েছে ৬.১%। এ ক্ষেত্রেও ফল প্রত্যাশার তুলনায় বেশি। তার আগের তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বৃদ্ধির হার ছিল ৪.৫%। সব অনুমানকে ছাপিয়ে গোটা বছরে ছুঁয়েছে ৭.২%। জানুয়ারি-মার্চে কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৫%, শিল্পে ৪.৫% এবং হোটেল-বাণিজ্য ইত্যাদিতে ৯.১%। যে হারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ছে, তাতে চলতি অর্থবর্ষের আর্থিক বৃদ্ধিও প্রাথমিক পূর্বাভাসকে (৬.৫%) পেরিয়ে যেতে পারে বলে আশা। তবে তাতে জল ঢালতে পারে কোনও কোনও অঞ্চলে খরা এবং কম বৃষ্টিপাত, বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি, রফতানিতে পতন।
মে মাসে জিএসটি সংগ্রহ ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে (১,৫৭,০৯০ কোটি টাকা)। তবে তা এপ্রিলের (১.৮৭ লক্ষ কোটি) থেকে কম। অন্য দিকে, বেড়েছে কারখানায় উৎপাদন। শিল্পোৎপাদনের পিএমআই সূচক উঠেছে ৩১ মাসের সর্বোচ্চ ৫৮.৭-তে। এটি ৫০-এর নীচে হলে সঙ্কোচন। যাত্রি গাড়ির বিক্রিও ১৩.৫% বেড়ে পৌঁছেছে ৩,৩৪,৮০২টিতে। বৃহত্তম নির্মাতা মারুতি সুজ়ুকি বেচেছে ১,৪৩,৭০৮টি। তার পরেই হুন্ডাই, বিক্রির সংখ্যা ৪৮,৬৪১। জিএসটি আদায়ের পাশাপাশি গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় অর্থনীতি এগোচ্ছে।
অর্থনীতির দিক থেকে কয়েকটি ভাল খবর থাকলেও, গত সপ্তাহে শেয়ার বাজার তেমন উচ্ছ্বসিত হয়নি। বরং বড় মাপের কিছু শেয়ার একটু নড়বড়ে ছিল। বাজারে মোট শেয়ার মূল্যের নিরিখে মাঝারি মাপের (মিড ক্যাপ) সংস্থাগুলিকে নিয়ে তৈরি শেয়ার সূচক কিছুটা শক্তি প্রদর্শন করেছে। ফলে ভাল জায়গায় পৌঁছেছে মিড ক্যাপ ফান্ডগুলির ন্যাভও। চলতি সপ্তাহে লগ্নিকারীদের নজর থাকবে সুদ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সিদ্ধান্তের দিক। কমিটির বৈঠকে বসবে ৬-৮ জুন। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ বারও সম্ভবত সুদ বাড়ানো হবে না।
(মতামত ব্যক্তিগত)