—প্রতীকী চিত্র।
এমনিতেই গত বছরের মতো এ বারও ভাল ফলন হওয়ার দরুন চাহিদার তুলনায় বাজারে জোগান বেশি কাঁচা পাটের। যার জন্য চাষিদের উৎপাদনের ভাল দাম পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। তার উপর অভিযোগ, বিদেশ থেকে আমদানিও বিপজ্জনক ভাবে বেড়েছে। যা দেশে পাটের সরবরাহ আরও বাড়িয়ে তার দরকে তলানিতে টেনে নামাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের পাট চাষি এবং বিক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে তা আমদানির উপর কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করল জুট কমিশনারের দফতর। পাশাপাশি বিদেশি পাটজাত পণ্য যাতে দেশীয় চট শিল্পকে টপকে বাজারের দখল নিতে না পারে, তাই সেগুলির আমদানির ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বার্তা, এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য মূলত বাংলাদেশ এবং নেপালের পণ্যকে আটকানো। যেখানে পাটের দাম ভারতের থেকে কম। মানও ভাল।
এত দিন কাঁচা পাট এবং পাটজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি মাসে জুট কমিশনারের কাছে হিসাব দাখিল করতে হত ভারতীয় রফতানিকারীদের। সম্প্রতি জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, এ বার থেকে প্রতি দিনের ভিত্তিতে কতটা আমদানি করা হচ্ছে তার হিসাব দিতে হবে। তার মধ্যে উল্লেখ করতে হবে, আমদানির পরিমাণ, কী ভাবে আমদানিকৃত পাট এবং পাটজাত পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে ইত্যাদি।
জুট কমিশনারের ওই নির্দেশ না মানা হলে, সংশ্লিষ্ট আমদানিকারীর লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। মলয়বাবু বলেন, “পাট বা পাটজাত পণ্য আমদানি বন্ধ করা হয়নি। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য, দেশের পাট চাষি এবং চট শিল্পকে সুরক্ষিত করা। এর জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা হচ্ছে নজরদারি বাড়িয়ে। যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’’
জুট কমিশনারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের পাট শিল্প এবং রফতানিকারীদের সংগঠন ফিয়ো। চটকলগুলির মালিকদের সংগঠন আইজেএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যন সঞ্জয় কাজারিয়া বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে শুধুমাত্র নজরদারি বাড়ালেই হবে না। দেশের বাজারে ঢুকে পড়া বিদেশি পণ্যের ন্যূনতম দাম (ফ্লোর প্রাইজ) বেঁধে দেওয়ার জন্যও জুট কমিশনারকে অনুরোধ করেছি। দেশের পাট শিল্পের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তগুলি জরুরি।’’
সঞ্জয়বাবু বলেন, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং নেপালে পাটের দাম ভারতের থেকে কম। গুণামানের দিক থেকেও সেগুলি উন্নত। ওই সব দেশ থেকে কাঁচা পাট ছাড়াও চটের বস্তা, বস্তা তৈরির সূতো এবং চট আমদানি করা হয়। ফিও-র পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান যোগেশ গুপ্তের আশা, জুট কমিশনারের পদক্ষেপ দেশের পাট চাষি এবং চট শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করবে।