ন্যূনতম বিকল্প করের ক্ষেত্রেও সাময়িক রেহাই চায় আতিথেয়তা ক্ষেত্র। প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ, তার মোকাবিলায় লকডাউন এবং সাধারণ মানুষের গতিবিধির ক্ষেত্রে হরেক নিষেধাজ্ঞা— এ সবের জেরে কার্যত ধসে গিয়েছিল পর্যটন-সহ সার্বিক অতিথেয়তা ব্যবসা। বহু হোটেল-রেস্তরাঁর ঝাঁপ স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বিপুল কোপ পড়ে কর্মসংস্থানে। অতিমারির ঢেউ পার করে এই ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ফের চালু হলেও কাজে ফেরেননি পুরনো কর্মীদের অনেকেই। এই সমস্ত সমস্যা সামলে এগিয়ে যেতে আসন্ন বাজেটে কেন্দ্রের কাছে কিছু রসদ চাইছে আতিথেয়তা ক্ষেত্র। যেমন, সহজ শর্তে ও কম সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ মঞ্জুরের জন্য ক্ষেত্রটিকে পরিকাঠামো ও শিল্পের স্বীকৃতি, সমস্ত ধরনের হোটেলের জন্য অভিন্ন জিএসটি হার চালু করা, হোটেলের খরচকে পর্যটন ভাতার (এলটিএ) আওতায় আনা, অন্তত দু’বছরের জন্য ন্যূনতম বিকল্প কর মকুব ইত্যাদি।
চালু কথায় শিল্প বলা হলেও আতিথেয়তা ক্ষেত্র এখনও পুরোপুরি সেই স্বীকৃতি পায়নি। ফলে মেলে না একাধিক সুবিধা। ফেডারেশন অব হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল জেসন চাকো এবং হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রদীপ শেট্টি আতিথেয়তা ক্ষেত্রকে পরিকাঠামো ও প্রকৃত অর্থে শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। জেসনের বক্তব্য, সাধারণত হোটেল-রেস্তরাঁ ব্যবসা সাত থেকে ন’বছরের জন্য ঋণ পায়। কিন্তু না-লাভ-না-ক্ষতিতে পৌঁছতে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বেশি সময় লাগে। তাই দীর্ঘমেয়াদি (১৫-২০ বছর) ঋণ জরুরি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রের স্বীকৃতি মিললে তা সহজ হবে। প্রয়োজনীয় তহবিল গড়তে পারবে সংস্থাগুলি। এর ফলে থাকার জায়গার মানের আরও উন্নতি হলে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড়ও বাড়বে।
শিল্পের স্বীকৃতি পেলে কম সুদে যেমন ঋণ মেলে, তেমনই কমে বিদ্যুৎ মাসুলও। জেসন জানান, যেমন এখন হোটেলগুলিকে বাণিজ্যিক হারে (যা সবচেয়ে বেশি) বিদ্যুৎ মাসুল গুনতে হয়। শিল্পের তকমা পেলে তুলনায় কম হারে (শিল্পের হারে) মাসুল দিতে হবে তাদের। তাঁর দাবি, কয়েকটি রাজ্য শিল্পের তকমা দিলেও বাস্তবে তার সুবিধা পায় না আতিথেয়তা শিল্প। সে কারণে ক্ষেত্রটিকে যুগ্ম তালিকায় এনে রাজ্যগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ করুক কেন্দ্র। কেন্দ্র-রাজ্যের সমন্বয় আরও ভাল হলে উপকৃত হবে এই ব্যবসা।
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি কর্মীদের বেড়াতে যাওয়ার জন্য যাতায়াত খরচের একাংশ ভাতা হিসেবে দেয়। প্রদীপের বক্তব্য, হোটেলের খরচও সেই সুবিধায় যুক্ত করা হোক। হোটেলে বিদেশি পর্যটকেরা যে টাকা মেটান, সেই আয়কে দেখা হোক বিদেশি মুদ্রা হিসেবে। রফতানি ক্ষেত্রের ইপিসিজি প্রকল্পের সুবিধার জন্য যা জরুরি।
ন্যূনতম বিকল্প করের ক্ষেত্রেও সাময়িক রেহাই চায় আতিথেয়তা ক্ষেত্র। প্রদীপের মতে, আগামী এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সেই করে ছাড় দেওয়া হোক। ইমারজেন্সি ক্রেডিট লিঙ্ক গ্যারান্টি স্কিমের (ইসিএলজিএস) মেয়াদ বাড়িয়ে অন্তত ১০ বছর করার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।