সরকারকে নতুন করে কষতে হবে বাজেটের হিসেব

শুক্রবারই পরিসংখ্যান এসেছে, এপ্রিল মাসে শিল্পোৎপাদন গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় ৫৫.৫% কমেছে। পুরো এপ্রিলে লকডাউন ছিল বলে এই সঙ্কোচন অপ্রত্যাশিত নয়।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৪:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাজেট দেখেই অর্থনীতিবিদদের মনে হয়েছিল, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কর আদায়ের অবাস্তব লক্ষ্য বেঁধেছেন। তা ছোঁয়া মুশকিল। তখনও করোনা-সঙ্কট শুরু হয়নি। লকডাউনও হয়নি। এর পরে লকডাউন শুরু হতে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা টের পান, বাজেটের লক্ষ্য ছোঁয়াটা ক্রমশ আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর এখন সেই হিসেব যে নতুন করে কষতে হবে, তা নিয়ে মোটামুটি নিশ্চিত তাঁরা। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে এপ্রিল-জুন মাসের বৃদ্ধির হার দেখেই নতুন করে বাজেটের অঙ্ক কষা শুরু হবে।

Advertisement

দু’মাসের লকডাউনের পরে শুক্রবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও শিল্পোৎপাদনের সূচক দেখার পরে এখন মন্ত্রকের কর্তারা নিশ্চিত যে, শুধু কেন্দ্র নয়, অনেক রাজ্যকেও নতুন করে বাজেটের অঙ্ক কষতে হবে। কারণ, চলতি বছরের বাজেটে কর্পোরেট কর, আয়কর, জিএসটি বা বিলগ্নিকরণ থেকে যে আয় হবে বলে ধরা হয়েছিল, তার কোনওটাই ছোঁয়া যাবে না। রাজ্যের মোট আয়ের সিংহভাগ আসে জিএসটি থেকে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় তা মার খেয়েছে। কবে কেনাকাটা ফের বাড়বে, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই।

নির্মলা বাজেটে ধরেছিলেন, চলতি অর্থবর্ষে জিএসটি থেকে কেন্দ্রের প্রায় ৬.৯০ লক্ষ কোটি টাকা আয় হবে। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ১২.৮% বেশি। এতখানি বৃদ্ধি কার্যত অসম্ভব মনে করা হয়েছিল। জিএসটি থেকে কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে মাসে গড়ে প্রায় ৯৫,০০০ কোটি থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা আয় হয়। লকডাউনের ধাক্কায় এপ্রিল-মে দুই মাস মিলিয়ে ৯৫,০০০ কোটি আদায় হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও একই। রাজ্যের এপ্রিল মাসে প্রায় ৪,৫০০ কোটি আয় হওয়ার কথা। নবান্ন সূত্রের খবর, সেখানে হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।

Advertisement

শুক্রবারই পরিসংখ্যান এসেছে, এপ্রিল মাসে শিল্পোৎপাদন গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় ৫৫.৫% কমেছে। পুরো এপ্রিলে লকডাউন ছিল বলে এই সঙ্কোচন অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু এর জেরে কর্পোরেট ও আয়কর থেকে আয় অনেকটাই ধাক্কা খাবে বলে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মেনে নিচ্ছেন। অত্যাবশকীয় পণ্য ছাড়া কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকায় কমবে উৎপাদন শুল্ক থেকে আয়ও। অথচ গত বছরের তুলনায় কর্পোরেট কর থেকে আয় ১১.৫%, আয়কর থেকে আদায় ১৪.০৯%, উৎপাদন শুল্ক থেকে আয় ৭.৭% হারে বাড়বে বলে নির্মলা বাজেটের অঙ্ক কষেছেন। মন্ত্রকের এক কর্তার স্পষ্ট কথা, “এমনিতেই গত তিন বছর কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যায়নি। এ বছর তো ধারেকাছেই পৌঁছনো যাবে না। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনাই একমাত্র রাস্তা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement