—প্রতীকী ছবি।
আনাজপাতির দাম লাগামহীন ভাবে বাড়ায় জুলাইয়ে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছেছিল ৭.৪৪ শতাংশে। অগস্টে যে স্বস্তি ফেরার তেমন সম্ভাবনা নেই, সেই ইঙ্গিত দিয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে বাস্তবে স্বল্প এবং সাধারণ রোজগেরে মানুষের জীবন কতটা উদ্বেগে কেটেছে, তা প্রকট হল ক্রিসিল মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্সের ‘ভাত-রুটির দাম’ (রোটি রাইস রেট) রিপোর্টে। তাতে বলা হয়েছে, গত মাসে নিরামিষ থালি রান্নার খরচ এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ২৪%। দাম চড়েছে আমিষ থালিরও। তবে তুলনায় কম হারে, ১৩%। জুলাইয়ে নিরামিষ থালির দাম বেড়েছিল ২৮%।
এ বারও অভিযোগ টোম্যাটোর দিকে। সমীক্ষা বলছে, নিরামিষ পাতের ২১% খরচ বেড়েছে শুধু এর সৌজন্যে। নয়াদিল্লিতে টোম্যাটোর দাম বৃদ্ধির হার ১৭৬%। গত বছরের অগস্টে যেখানে দাম ছিল কেজিতে ৩৭ টাকা, সেখানে এ বার ১০২ টাকা। জুলাইয়ে দর আরও উঁচু ছিল। তবে গত মাসে আরও বেশি খরচের কবল থেকে আমজনতাকে রক্ষা করেছে মূলত আলু এবং ভোজ্যতেলের পড়তি দাম। এগুলি কমেছে যথাক্রমে ১৪% এবং ১৭%। আমিষ থালির অর্ধেক খরচ ব্রয়লার মুরগির। তার দাম ১%-৩% বেড়েছে। ফলে সেই থালির উপরে ধাক্কা এসেছে কম। ১৩% দাম বৃদ্ধির কারণ মূলত ওই আনাজই।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, খাবারের দাম জুলাইয়ের থেকে কমেছে ঠিকই। তবে অগস্টেও তা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানোর মতোই চড়া। যাঁরা সব দিক থেকে আয়ের তুলনায় ভারী হওয়া খরচের বোঝায় কোণঠাসা। কেন্দ্র এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ইঙ্গিত, বর্ষার ঘাটতি পুষিয়ে গেলে দ্রুত কমবে খাদ্যপণ্যের দাম। সেটা হতে পারে এই মাস থেকেই। কিন্তু অনিয়মত বর্ষা থাকলে যে আসন্ন ভোটের মুখে অস্বস্তি বাড়তে পারে, তা-ও বিলক্ষণ বুঝতে পারছে কেন্দ্র। নিয়মিত বৃষ্টিতে ফলন এবং জোগান ব্যবস্থা ধাক্কা খাওয়াতেই টোম্যাটো কিছু দিন আগে ২০০ টাকা পেরিয়েছিল। বেগুন পৌঁছেছিল ১০০ টাকার কাছে। ঘুম কাড়ছিল চাল-ডাল-গমের দর। যে কারণে তড়িঘড়ি চাল-ডালের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করে, টোম্যাটোর মতো পণ্যের আমদানি বাড়িয়ে কিংবা বিভিন্ন আনাজ খোলা বাজারে কম দামে বিক্রি করে দামের আঁচ কমাতে উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার। ২০০ টাকা কমিয়ে দিয়েছে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার।
ক্রিসিলের রিপোর্ট বলছে, সরকারের এই সব পদক্ষেপের ফলেই চলতি মাসে ছবি খানিকটা বদলাতে পারে। অন্যান্য আনাজে বিশেষ বদল না হলেও টোম্যাটোর দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বৃহস্পতিবার কলকাতার বিভিন্ন বাজারে তার দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। এখানে অন্যান্য আনাজের দামও বেশ কিছুটা কমেছে। তবে স্বস্তি পুরোপুরি ফিরবে কি না, তা বোঝা যাবে আরও কিছু দিন পরে।